1. hrhfbd01977993@gmail.com : admi2017 :
  2. editorr@crimenewsmedia24.com : CrimeNews Media24 : CrimeNews Media24
  3. editor@crimenewsmedia24.com : CrimeNews Media24 : CrimeNews Media24
শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
"ফটো সাংবাদিক আবশ্যক" দেশের প্রতিটি থানা পর্যায়ে "ক্রাইম নিউজ মিডিয়া" সংবাদ সংস্থায় ১জন রিপোর্টার ও ১জন ফটো সাংবাদিক আবশ্যক। আগ্রহী প্রার্থীরা  যোগাযোগ করুন। ইমেইলঃ cnm24bd@gmail.com ০১৯১১৪০০০৯৫

বৃদ্ধা মাকে নিয়ে নৌকায় ১৩ বছর!

  • আপডেট সময় শনিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২১, ৫.৪৭ এএম
  • ৪১৬ বার পড়া হয়েছে
বৃদ্ধা মাকে নিয়ে নৌকায় ১৩ বছর!

সিএনএম প্রতিনিধিঃ

শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার পূর্ব ডামুড্যা ইউনিয়নের রামরায়কান্দি গ্রামের ভোটার মা-ছেলে। নুরু মিয়ার (৫৩) মায়ের নাম গোলাপী (৮৭), বাবা মৃত আশ্রাফ আলী।আড়াই শতাংশ জমিতে একটি বাড়ি আছে নুরু মিয়ার। তবে সেখানে থাকা হয় না তার।
মাকে ছাড়া থাকবেন কী করে নুরু! তাই একদিন সব ছেড়ে মাকে নিয়ে নৌকায় উঠলেন তিনি। সেই থেকে নদী-নৌকাই তার আর মায়ের বাড়ি-জমি-সংসার। ‘সেটা দু-এক মাস বা বছর নয়, ১২-১৩ বছর ধরে নৌকায় মা-ছেলের বসবাস!’
নুরু মিয়া নদীতে মাছ ধরেন। এ থেকে যা আয়-রোজগার হয় তা দিয়েই চলে মা-ছেলের সংসার। মায়ের বয়স ৯০-এর কাছাকাছি, কিন্তু এখনো তিনি পান না সরকারি কোনো ভাতা। এ বিষয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে ঘুরেও কাজ হয়নি। তাই এখন আর কারো কাছে যান না তারা।
জয়ন্তী নদীর পারে কথা হয় বৃদ্ধা গোলাপীর সঙ্গে। নাম গোলাপী হলেও ছোটবেলা থেকেই তার কষ্টের জীবন।
তিনি জানান, তার এক চাচা তাদের জমি দখলের উদ্দেশ্যে তাকে চার-পাঁচ বছর বয়সে এক বেদেপল্লীতে ৬০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন।
গোলাপী বলেন, জীবনের প্রতিটি সময় কেটেছে দুর্দশার মধ্যে। আমার বাবা কুমিল্লায় অনেক জায়গা-সম্পদের মালিক ছিলেন। আমার নিজের চাচা জায়গার জন্য আমাকে বিক্রি করে দেয় ছোটবেলায়। ৫০-এর প্রথম গণ্ডগোল আমি স্বচক্ষে দেখেছি। অনেক ইতিহাস মনে আছে। যুদ্ধের (মুক্তিযুদ্ধ) সময় আমি আমার স্বামীকে নিয়ে নদীতে ছিলাম। স্বামী মরার পর এখনো সেই নদী আমার ঠিকানা!
গোলাপী আরো বলেন, আমি ঢাকায় এক বস্তিতে ছিলাম। ছেলে আমাকে জোর করে দেশে নিয়ে আসে। আসার পর থেকে ছেলের বউ আমাকে দেখতে পারে না। বেশ কয়েকবার এটা নিয়ে দরবার সালিস হয়। পরে ছেলে আমাকে নিয়ে নেমে পড়ে নৌকায়। আজও ছেলে এই নৌকা দিয়ে মাছ ধরে। এতে যা রোজগার হয় তা দিয়ে মা-ছেলের সংসার চলে। যদি কিছু না পায় তাহলে না খেয়ে থাকি। এ ছাড়া উপায় কী আর!
নুরু মিয়া বলেন, মা ঢাকা থেকে আসার পর বউ সব সময় মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করত। কখনো কখনো তাকে মারার জন্য তেড়ে আসত। আমি বাড়িতে থাকতাম না, কাজকাম করার জন্য চলে যেতাম। এলে মা কাঁদত আর বলত।
মা আমাকে কয়েকবার বলছে, আমাকে যেখান থেকে আনছত সেখানেই রেখে আস। তাহলে তুই ভালো থাকবি। আমি বউকে অনেক বুঝিয়েছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। কয়েকবার স্থানীয় দরবার হয়েছে। সব হয়, কিন্তু বউ মানে না। এতে সব শেষ হয়ে যায়। পরে মাকে নিয়ে নিজের টাকা দিয়ে বানানো নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। আর বাড়ি ফিরি নাই। এখন নৌকায় মা-ছেলে থাকি। আমি মাছ ধরি। এটা দিয়েই সংসার চলে।
নুরু জানান, বাড়ির জমিটি তার আর স্ত্রীর নামে। স্ত্রী-সন্তানরা বাড়িতেই থাকে।
সরকারি কোনো সুবিধা পান কি না, জানতে চাইলে নুরু বলেন, চেয়ারম্যান-মেম্বার আর গণ্যমান্য কেউ বাকি নাই যে যাইনি। এখন আর চাই না। তারা মুখ দেখে দেখে দেয়। আমরা গরিব মানুষ, কেউ ব্যবস্থা করে দেয় না।
এ ব্যাপারে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও পূর্ব ডামুড্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজ লিটন ফোন ধরেননি।
ডামুড্যা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান বলেন, এখন আর কারো কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। অনলাইনে আবেদন করলেই হয়। আমি গোলাপীর ব্যাপারে জানি না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazar_crimenew87
© All rights reserved © 2015-2021
Site Customized Crimenewsmedia24.Com