চলচ্চিত্রের তারকা দম্পতি ওমর সানী-মৌসুমী। দীর্ঘ ২৭ বছরের সংসারে ভাঙনের সুর বেজে উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক মাস ধরেই ওমর সানী-মৌসুমীর মধ্যে মনোমালিন্যে দেখা দিয়েছে। এক ছাদের নিচে বসবাস করলেও কেউ কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। এদিকে এই তারকা দম্পতির ব্যক্তিগত বিষয়গুলো এখন সবার মুখে মুখে।
সম্প্রতি ডিপজলের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে জায়েদ খানকে চড় মেরেছেন ওমর সানী। এর কারণ হিসেবে ওমর সানী বলেছেন, তার স্ত্রী অভিনেত্রী মৌসুমীকে দীর্ঘদিন ধরেই বিরক্ত করছিলেন জায়েদ। তবে চড়ের পাল্টা জবাবে পিস্তল দিয়ে গুলি করার হুমকিও নাকি দিয়েছেন জায়েদ। এ বিষয়ে রোববার শিল্পী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওমর সানী। তবে বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে মিথ্যা ও বানোয়াট বলেন জায়েদ। তবে যাকে নিয়ে এত ঘটনা সেই মৌসুমী ছিলেন নিশ্চুপ।
সোমবার এ বিষয়ে একটি অডিও বার্তা দেন মৌসুমী। সংবাদকর্মীদের কাছে পাঠানো সেই অডিও বার্তায় মৌসুমী বলেন, ওমর সানী মিথ্যাচার করছে, জায়েদ আমাকে অসম্মান করেনি। তিনি নিজের স্বামী ওমর সানীর অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ‘আমি মনে করি আমার প্রসঙ্গটা টানার কোনো প্রয়োজন ছিল না। আমি জায়েদকে অনেক স্নেহ করি, সেও আমাকে যথেষ্ট সম্মান করে। আমাদের মধ্যে যতটুকু কাজের সম্পর্ক, সেটা খুবই ভালো একটা সম্পর্ক। সেখানে আমাকে অসম্মান করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। ওর মধ্যে ভালো গুণ ছাড়া এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারে এমন কিছুই আমি দেখিনি। তারপর বলব, ও অনেক ভালো ছেলে। সে কখনই আমাকে অসম্মান করেনি।’
মৌসুমী আরও বলেন, ‘কেন এ প্রশ্নটা বারবার আসছে, সে আমাকে বিরক্ত করছে- উত্ত্যক্ত করছে, এই জিনিসটা আমার আসলে… জানি না এটা কেন হচ্ছে। এটা যদিও একান্ত আমাদের ব্যক্তিগত সমস্যা। সে সমস্যা আমাদের পারিবারিকভাবেই সমাধান করা দরকার ছিল।’
এরপরই দৃশ্যপট পাল্টে গেল। সবার মনে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি ওমর সানী-মৌসুমীর ২৭ বছরের সংসারে দূরত্ব দেখা দিয়েছে। মৌসুমীর অডিওবার্তা প্রকাশের ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ফেসবুক লাইভে এসে ওমর সানী বলেন, ‘আমি যে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছি, সেই জায়গায় এখনও অটল আছি। আমরা সংসারের প্রতি এখনও অনেক শ্রদ্ধাশীল, আমার স্ত্রীকেও অনেক শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাই। আজ পর্যন্ত তাকে নিয়ে কোনো নেতিবাচক কথা বলিনি। আর সামনে বলতেও চাই না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি না মৌসুমী কেন এমন কথা বলেছে। তবে সবাইকে অনুরোধ করব, মৌসুমীকে নিয়ে কোনো বাজে মন্তব্য করবেন না। এ বিষয়ে আমি আর কোনো কথা বলতে চাই না। এ বিষয়ে কথা বলবে আমার ছেলে-মেয়ে। তারাই এখন বাকিটা তুলে ধরবে। জায়েদ খানের গাড়িসহ যথেষ্ট প্রমাণ আমার আর ফারদিনের কাছে আছে। সবচেয়ে বড় কথা, আমার গার্ডিয়ান হচ্ছে আমার ছেলে ফারদিন, মেয়ে ফাইজা, বউমা আয়শা।’
লাইভের শেষদিকে ওমর সানী বলেন, ‘অনেকেই বলছে ওমর সানী ভাইরাল হওয়ার জন্য এরকম কর্মকাণ্ড করছে। আমি একটা বিষয় পরিষ্কার করে বলতে চাই, চলচ্চিত্র আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। হিট, সুপারহিট, নাম্বার ওয়ান সবকিছু পেয়েছি এই জীবনে। আমার আর ভাইরাল হওয়ার কিছু নেই।’ এদিকে ওমর সানী ও মৌসুমী দম্পতির সন্তান ফারদিন এহসান স্বাধীন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘পুরো ঘটনাটি নিয়ে আম্মু (মৌসুমী) বিরক্ত। এ ঘটনায় উনার নাম জড়িয়ে পড়ার কারণে আব্বুর (ওমর সানী) ওপর রেগে আছেন। তাই অডিওবার্তা দিয়েছেন। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাইছি না।’
ওমর সানী-মৌসুমী দম্পতির ঘনিষ্ঠজনরা বলেন, ‘এর আগেও ওমর সানী ও মৌসুমীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়েছে। কেউ কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। পরে নিজেরা বিষয়টি মিটমাট করেছেন। কিন্তু এবার সবকিছু প্রকাশ্যে হওয়ায় কিছুটা অবাক হয়েছি।’