সঠিক সময়ে প্রশ্নপত্র না আসা, প্রশ্নপত্রে বেশি প্রশ্ন থাকাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগের মধ্য দিয়ে শুক্রবার লালমনিরহাটে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বঞ্চিতদের কেউ কেউ এ সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে বিক্ষোভ করেছে। এদিকে অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ৭২ চাকরিপ্রত্যাশীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে অন্য দুই পরীক্ষার্থীকে।
জানা গেছে, এবার লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার ১৫ হাজার ১৪৪ চাকরিপ্রত্যাশীর মধ্যে গতকাল পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন ৩ হাজার ৮৭৯ জন। এর মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে আদর্শ কলেজ কেন্দ্র থেকে ১৮ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া অসদুপায় অবলম্বন ও ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের অভিযোগে আরও ৫৪ জনকে বহিষ্কার করা হয়। অন্যদিকে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা দেওয়ার দায়ে পিযুষ কান্তি রায় ও অন্যের হয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন অন্তর কুমার রায় নামে এক পরীক্ষার্থী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল ‘পদ্মা’, ‘মেঘনা’, ‘যমুনা’ ও ‘সুরমা’ এই চার গ্রুপে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে লালমনিরহাট সরকারি কলেজসহ অন্তত তিনটি কেন্দ্রে সঠিক সময়ে পদ্মা, যমুনা ও সুরমা গ্রুপের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারলেও মেঘনা গ্রুপের পরীক্ষার্থীরা একই সঙ্গে পরীক্ষা দিতে পারেননি। বেলা ১১টায় নির্ধারিত পরীক্ষা শুরু হয়ে ওই তিন গ্রুপ প্রাপ্তদের যথারীতি পরীক্ষা শেষ হয় দুপুর ১২টায়। আর মেঘনা গ্রুপের পরীক্ষার্থীদের আলাদা করে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত পরীক্ষা গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। এতে অনেক শিক্ষার্থী কেন্দ্রেই বিক্ষোভ শুরু করেন। সাড়ে ১২টায় আলাদা করে পরীক্ষা গ্রহণের ঘোষণা শুরুতেই না পেয়ে মেঘনা গ্রুপের অনেক শিক্ষার্থী কেন্দ্র ছেড়ে চলে যান অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে লালমনিরহাট সরকারি কলেজে সুরমা গ্রুপে পরীক্ষা দেওয়া চাকরিপ্রত্যাশী অনেকেই পরীক্ষা বাতিলের দাবি করেছেন। কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, প্রতিটি সেটে ৮০টি এমসিকিউ থাকার কথা থাকলেও সুরমা সেটে ৮৩টি এমসিকিউ ছিল।
লালমনিরহাট সরকারি কলেজ কেন্দ্রের বিজ্ঞান ভবনের ২১২ ও ২২৩ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দেওয়া সাদিকা খাতুন ও আমেনা আক্তার নামের দুই চাকরিপ্রত্যাশী জানান, প্রতিটি সেটে ৮০টি করে এমসিকিউ থাকার কথা থাকলেও আমাদের ৩০৭১ নম্বর সেটে ৮৩টি এমসিকিউ ছিল। যেখানে একই ক্রমিক নংয়ের প্রশ্ন একাধিক ছিল। এ অবস্থায় যত ভালোই পরীক্ষা দেই না কেন অকৃতকার্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কর্তৃপক্ষের ভুলে আমাদের ক্ষতি হবে কেন? আমরা এই পরীক্ষা বাতিল চাই।
জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। একটি কেন্দ্রে কোনো কোনো চাকরিপ্রত্যাশী পরীক্ষা ভণ্ডুল করার চেষ্টা করলে তা শক্ত হাতে দমন করা হয়েছে। আর অন্যান্য কিছু সমস্যা ছিল যা আমরা সমাধান করেছি। একটি কেন্দ্রে আমরা প্রশ্নপত্রে ভুলের বিষয়ে জানতে পেরেছি তবে তা আমরা সমাধান করেছি। আর এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি।