বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অষ্টম নিরাপত্তা সংলাপ শুরু হয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টে বুধবার ওয়াশিংটন সময় সকাল ৯টায় বৈঠকটি শুরু হয়।
এতে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্বে দিচ্ছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। অন্যদিকে ওয়াশিংটনের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি বনি জেনকিন্স।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এক টুইটে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। টুইটে তিনি জানান, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অষ্টম নিরাপত্তা সংলাপ শুরু হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ওয়াশিংটনের আগ্রহে এই প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে নিরাপত্তা সংলাপ শুরু হয়েছে। পুরো সংলাপটি চারটি সেশনের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।
জানা যায়, সংলাপে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় গুরুত্ব পাবে। বিশেষ করে ঢাকার পক্ষ থেকে র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি তোলা হবে। অন্যদিকে ওয়াশিংটন সমরাস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে জিসোমিয়া ও আকসা তথা প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে ঢাকার অবস্থান জানতে চাইবে। পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে বাংলাদেশের যোগ দেওয়ার বিষয়টি থাকবে আলোচনায়।
গত ২০ মার্চ ঢাকায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অষ্টম অংশীদারিত্ব সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপ শেষে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া ন্যুল্যান্ড সাংবাদিকদের জানান, প্রতিরক্ষা খাতে জিসোমিয়া ও আকসায় ঢাকার সঙ্গে চুক্তি করতে আগ্রহী তার দেশ। সেই লক্ষ্যে ঢাকাকে এ চুক্তিগুলো করতে একটি খসড়া কপি দেওয়া হয়। এছাড়া মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি জানান, আইপিএসে বাংলাদেশ যুক্ত হলে ওয়াশিংটন খুশি হবে।
সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে জানান, জিসোমিয়া ও আকসা চুক্তির খসড়া নিয়ে এখনই ভাবছে না সরকার। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা পরবর্তীতে চিন্তা-ভাবনা করবেন।
ঢাকা-ওয়াশিংটনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে গত শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ইস্কাটনে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের জানান, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করব না। আমরা তো অস্ত্রের ভাণ্ডার সৃষ্টি করতে চাই না। কারণ আমাদের প্রয়োজন নেই। আমরা খুব শান্তি প্রিয় দেশ। সব প্রতিবেশীর সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক। অস্ত্র সংগ্রহ করলেই যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব আসে। আমরা ওগুলোতে নেই। তোমাদের (যুক্তরাষ্ট্র) অন্যান্য প্রযুক্তি আছে, সেটা আমাদের দাও। অস্ত্র আমাদের খুব কম প্রয়োজন।
কারও চাপে পড়ে বাংলাদেশ কিছু করে না— উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা চাপের মধ্যে কিছু করব না। চাপের মুখে আমরা কিছু করব না। আমরা আমাদের দেশের মঙ্গলের জন্য যা যা প্রয়োজন সেগুলো করব।
ওই দিন ইন্দো-প্যাসিফিক প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের রিকুয়েস্ট করেনি। এটা একটা দর্শন। এ দর্শনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক মোটামুটি এক। তারা যেটা বোঝাতে চায়, অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অঞ্চল। আমরাও সেটা চাই। কোনো রাষ্ট্র এটাকে বাধাগ্রস্ত করুক তারা এটা চায় না, আমরাও চাই না। এ ক্ষেত্রে আমরা মোটামুটি এক।
তিনি বলেন, আমরা কারও লেজুড় হতে চাই না। এটা বাধাগ্রস্ত হোক সেটা আমরা চাই না। এটা রাজনীতির একটা চেসপোর্ট হোক এটা আমরা চাই না।