বিসিএস পরীক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার সাথীর মৃত্যুর ঘটনায় জেলা ডিবির কনস্টেবল মাইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৩ মার্চ) বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা করেন নিহতের পিতা সিরাজুল হক মৃধা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম।
তিনি জানান, সাদিয়া আক্তার সাথীর পিতা আজ থানায় লিখিত এজাহার দিলে তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। মামলায় মাইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই কর্মকর্তা বলেন, সাদিয়ার মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। দোষী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এর আগে রোববার (১৩ মার্চ) সকালে বাবুগঞ্জ প্রেসক্লাবে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কোনো সহযোগিতা করছে না উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহতের পিতা সিরাজুল হক। তিনি ন্যায় বিচার পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সিরাজুর হক অভিযোগ করে বলেন, সাত দিনেও মাইনুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনেনি পুলিশ। আমরা জানতে পেরেছি পুলিশ হাসপাতালে মাইনুলকে আত্মগোপনে রাখা হয়েছে। ঘটনার এতদিনেও পুলিশের কোনো লোক আমাদের খবর নেয়নি। অথচ আমি মেয়ে হারিয়েছি।
সিরাজুল হক দাবি করেন, ঘটনার দিন ডিবির কনস্টেবল মাইনুল সবাইকে নিজেই ফোন করে সাদিয়ার মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল। যদি মাইনুল সেখানে না থাকতো তাহলে কীভাবে সে জানলো সাদিয়ার মৃত্যু হয়েছে? আমি মনে করি আমার মেয়ে সাদিয়াকে প্রতারক মাইনুল হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার কথা প্রচার করছে।
তিনি বলেন, প্রতারক মাইনুল ইসলাম আমার মেয়ে নিহত হওয়ার দিন থেকেই পলাতক। পরিবারের কারো সাথে সে যোগাযোগ করেনি। সাদিয়ার ডায়েরিতেও লেখা আছে, মাইনুল একজন প্রতারক। সে কনস্টেবল হয়েও এসআই পরিচয়ে আমার মেয়েকে বিয়ে করেছে। আগেও তার বিয়ে ছিল। দুটি সন্তানও রয়েছে। যখন তার প্রতারণার কথা সাদিয়া জানতে পারে তখন থেকেই মাইনুল অগ্নিরুপ ধারণ করে। দিনের পর দিন অত্যাচার করে আমার মেয়েকে। এ ছাড়াও সে আমার মেয়েকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে স্বর্ণালংকার ও ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। যার ৮ লাখ টাকা ফেরত দিলেও বাকি ৫ লাখ টাকা ফেরত দেয়নি।
নিহত সাদিয়ার পিতা বলেন, মেয়ের এ ধরনের মৃত্যু কতটা কষ্টের তা আপনাদের বোঝাতে পারব না। আমি পুলিশ-প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। খুনি মাইনুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আমার মেয়ে হত্যার বিচার যেন পেতে পারি এ জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে কেদারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরে আলম বেপারীসহ নিহত সাদিয়ার স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার (৭ মার্চ) বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২০ নং ওয়ার্ড বৈদ্যপাড়ায় একটি ভবনের ৫ তলা থেকে সাদিয়া আক্তার সাথী নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সাদিয়া আক্তার সাথী ও বরিশাল জেলা ডিবির কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম এক বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করে বরিশালে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।##