তীব্র তুষারপাতের কারণে ইউরোপ ও এশিয়ার সংযোগ স্থাপনকারী দেশ তুরস্কের ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তুষারপাতের পর পুরো বিমানবন্দর বরফে ঢেকে যাওয়ার কারণে সোমবার (২৪ জানুয়ারি) কর্তৃপক্ষ ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
তুরস্কের ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এবং ইউরোপের সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দর। তুরস্ক ও গ্রিসসহ ভূমধ্যসাগরের পূর্বাঞ্চলীয় বিস্তৃত এলাকায় সম্প্রতি যে ব্যাপক তুষারপাত শুরু হয়েছে তারই জেরে বিমানন্দরটিতে ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আলজাজিরা জানিয়েছে, তুষারপাতের কারণে সোমবার প্রাথমিকভাবে তুর্কি সময় মঙ্গলবার ভোর চারটা (বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা) পর্যন্ত বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ফ্লাইট চলাচল বন্ধের মেয়াদ আরেক দফা বাড়িয়ে স্থানীয় সময় দুপুর ১টা (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা) পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এরপর পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তুরস্কের কেন্দ্রীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান হুসেইন কেসকিন টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বলেছেন, ‘খারাপ আবহাওয়া অব্যাহত থাকায় কোনো ফ্লাইটই রানওয়ে থেকে উড্ডয়ন অথবা অবতরণ করতে পারছে না। আর এ কারণে ফ্লাইট বন্ধের সময়সীমা দুপুর ১টা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
এদিকে তীব্র তুষারপাতের কারণে ইস্তাম্বুলের এই বিমানবন্দরের পাশাপাশি সেখানকার স্কুল, করোনা টিকাদান কেন্দ্র এবং শপিংমলও বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া পরিবহন ব্যবস্থাপনায়ও বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। টানা তুষারপাতের কারণে বহু মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছেন।
আলজাজিরা জানিয়েছে, তীব্র তুষারপাতের পর ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরের একটি কার্গো টার্মিনালের ছাদ ধসে পড়েছে। ছাদের ওপরে বরফ জমে থাকার কারণেই সেটি ভেঙে পড়ে। অবশ্য এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। এছাড়া বরফে আটকে পড়া বিমানগুলো মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন স্থান থেকে সেখানে এসেছিল এবং সোমবার সেগুলো এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।
ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরের নামের পাশে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এবং ইউরোপের সবচেয়ে ব্যস্ত এয়ারপোর্টের তকমা রয়েছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে তুরস্কের ৯৫তম স্বাধীনতা দিবসে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এই বিমানবন্দর উদ্বোধন করেছিলেন।
২০২৩ সাল নাগাদ এ বিমানবন্দরের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। পুরোদমে চালু হওয়ার পর থেকে বছরে ২০ কোটি যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবেন। ২০২১ সালে ৩ কোটি ৭০ লাখের বেশি যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেছিলেন।