সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। মামলার রায়ে তালা-কলারোয়া আসনের দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আব্দুল কাদের নামে এক আসামির ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। রায়ে সর্বনিম্ন সাজা দেয়া হয়েছে চার বছর।
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. হুমায়ুন কবীরের আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
রায়কে ঘিরে সাতক্ষীরা আদালত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি এ মামলার ৫০ আসামির মধ্যে কাঠগড়ায় উপস্থিত তালা-কলারোয়া আসনের দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৪ জনের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান আদালত। ১৫ জন পলাতক রয়েছেন। আর টাইগার খোকন নামের একজন আগে থেকে অন্য মামলায় জেলহাজতে আটক রয়েছেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি ও শেখ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা ও সাতক্ষীরার পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ। আসামি পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাডভোকেট তোজাম্মেল হোসেন, অ্যাডভোকেট আবদুস সেলিম প্রমুখ।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরায় একজন মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখে মাগুরায় ফিরে যাচ্ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তৎকালীন সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. হাবিবুল ইসলাম হাবিবের পরামর্শে ও নির্দেশক্রমে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আসামিরা বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, হাত বোমা, রামদা, লোহার রড, বাঁশের লাঠি, শাবল ইত্যাদি মারাত্মক অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গুরুতর জখম ও খুন করার প্রস্তুতি নিয়ে সাতক্ষীরা জ-০৪-০০২৯ বাসটি দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। কলারোয়ায় পৌঁছালে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিনি প্রাণে রক্ষা পেলেও তার সফরসঙ্গী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগনেতা ফাতেমা জামান সাথী, আব্দুল মতিন, জোবায়দুল হক রাসেল ও শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। একইসময় সাতক্ষীরার বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও হামলার শিকার হন।
এ ঘটনায় কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মোসলেমউদ্দিন ২৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ মামলা থানায় রেকর্ড না হওয়ায় তিনি নালিশি আদালত সাতক্ষীরায় মামলাটি করেন। পরে এ মামলা খারিজ হয়ে গেলে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ফের মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। ২০১৫ সালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।