চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে ও উদ্ধার অভিযান ত্বরান্বিত করতে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ২০ সদস্যের একটি বিশেষ টিম সীতাকুণ্ড যাচ্ছে।
রোববার (৫ জুন) সকালে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডে কাজ করতে ঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ২০ জনের বিশেষ হ্যাজম্যাট টিম চট্টগ্রামে যাচ্ছে। হ্যাজম্যাট (হ্যাজারডাস মেটারিয়াল) টিমের এসব সদস্য দেশে-বিদেশে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, বিদেশ থেকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত হ্যাজম্যাট টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করলে আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার কাজ ত্বরান্বিত হবে।
এর আগে সকালে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে আগুনে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এখনও নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুই কর্মী। এছাড়া আহত ১৫ কর্মীকে সিএমএইচসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার জানান, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ জন কর্মী নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এর মধ্যে মনিরুজ্জামান নামে একজনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। মরদেহগুলো পুড়ে যাওয়ায় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। এ ঘটনায় এখনও দুজন কর্মী নিখোঁজ ও ১৫ জন গুরুতর আহত অবস্থায় এমএইচসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত ও ২ শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেলসহ আশপাশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করছেন।
সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ২৪ একর জায়গায় অবস্থিত। এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে। এখান থেকে পণ্য রপ্তানির জন্য কনটেইনারগুলো প্রস্তুত করে চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়। ৩৮ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। ঘটনার সময় সেখানে ৫০ হাজার কনটেইনার ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সময় অন্তত দুইশ শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন বলেও জানা গেছে। তবে সেখানে ঠিক কত সংখ্যক মানুষ তখন ছিলেন তা এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি।