সিএনএমঃ
রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে আড়াই বছর বয়সী শিশু তাওসিনকে অপহরণের ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রমনা বিভাগ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই শিশুকে টাকার বিনিময়ে কেনা এক সিএনজিচালককেও।
গ্রেপ্তাররা হলেন, অপহরণকারী সুলতানা আক্তার ওরফে নেহা (২২), তার স্বামী সাইফুল ইসলাম (২৭) ও ক্রেতা মো. শাহজাহান (৩৪)। গতকাল বুধবার কুমিল্লার লালমাই ও বরুড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২১ মার্চের। রাজধানীর হাজারীবাগের বাসিন্দা স্বপ্না বেগম ও নুরুল ইসলামের বাসার সামনে খেলছিল তাদের ছেলে ও মেয়ে। সেখানেই বাচ্চাদের সঙ্গে সখ্যতা করে তোলে বোরখা পরা এক নারী। পরে বড় বোন পাঁচ বছর বয়সী তাবাসসুমকে চিপস কিনে দিয়ে তার দুই বছর চার মাস বয়সী ছোট ভাই তাওসীনকে নিয়ে চম্পট দেয় সেই নারী।
ছেলেকে ফিরে পেতে মামলা করেন বাবা-মা।মামলার পর ছায়া তদন্ত শুরু করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বোরখা পরায় সিসি ফুটেজ ধরে অভিযানে নেমে কোনো কূলকিনারা করতে পারছিল না গোয়েন্দারা। পরে আশেপাশের সড়কের সিসি ক্যামেরার সেই নারীকে মোবাইলের দোকানে রিচার্জ করতে দেয়া যায়। দোকান থেকে পাওয়া ফোন নম্বর থেকে অভিযান চালিয়ে সেই নারী সুলতানা আক্তার নেহাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। পরে জানা যায়, শাহজাহান নামের এক সিএনজি চালকের কাছে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয় তাওসিনকে।
ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গতকাল কুমিল্লার লালমাইয়ে অভিযান চালিয়ে শাহজাহানের বাড়িতে থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। তিনি ৫০ হাজার টাকায় শিশুটিকে সাইফুল-নেহা দম্পতির কাছ থেকে কিনে নেন। এছাড়া একই দিনে বরুড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে নেহা ও সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি প্রধান বলেন, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নিঃসন্তান দম্পতির কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে চাহিদা মতো শিশু চুরি করে বিক্রি করতেন। অপহরণের কাজটি করতেন সাইফুলের স্ত্রী নেহা। তিনি বিভিন্ন এলাকা শিশুদের টার্গেট করতেন। এরপর কৌশলে শিশুদের চকলেট, চিপসসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে কোলে করে নিয়ে সটকে পড়তেন। ভুক্তভোগী শিশু তাওসীনকে তারা অপহরণ করে কুমিল্লার শাহজাহানের কাছে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিল।
ডিবি পুলিশ বলছে, নেহাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সে আরও কোনো শিশুকে চুরি করে বিক্রি করেছে কি-না, তাও খতিয়ে দেখবে গোয়েন্দা পুলিশ।