চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে স্ত্রী সালমা খাতুনকে (২৪) ভারতে নিয়ে বিক্রি করতে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করে দেশে ফিরে আসেন স্বামী কামরুল ইসলাম। দেশে ফিরে তিনি প্রচার করতে থাকেন, স্ত্রীকে হারিয়ে ফেলেছেন। তবে তার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় বুধবার (১১ মে) যশোর কোতোয়ালি থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন সালমার বাবা শহিদুল ইসলাম। রাতে অভিযুক্ত কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
কামরুল ইসলাম যশোর সদর উপজেলার বানিয়ারগাতী গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে।
জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপন কুমার সরকার জানান, গত ১৫ এপ্রিল কামরুল ইসলাম (৩০) তার স্ত্রী সালমা খাতুনকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে নিয়ে যায়। এরপর ৮ মে স্ত্রীকে ছাড়াই দেশে ফিরে আসেন। স্ত্রীর পরিবারের লোকজন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে খারাপ আচরণ করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় সে। ভারতে সালমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ পায় পরিবারের লোকজন।
এ ঘটনায় সালমার বাবা শহিদুল ইসলাম বুধবার কোতোয়ালি মডেল থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন। ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় রহস্য উদঘাটন ও ভিকটিমকে উদ্ধারের দায়িত্ব পায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, ভিকটিম সালমাকে ভারতের গুজরাটে বিক্রির চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যা করে কামরুল দেশে পালিয়ে আসে। বুধবার রাতে পুলিশ বসুন্দিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কামরুলকে গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে কামরুল জানিয়েছেন, স্ত্রী সালমাকে চাকরির প্রলোভন দিয়ে ভারতের গুজরাটে নিয়ে বিক্রির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সেখানে একটি ভাড়া বাসার মধ্যে নাকে-মুখে আঘাত ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে দেশে পালিয়ে আসেন। এ ঘটনায় অভিযুক্তের তিনটি পাসপোর্ট, ভিকটিমের পাসপোর্ট ও ভিকটিমের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত সালমা খাতুনের বাবা শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দুই বছর আগে তার মেয়ের সঙ্গে পাশের গ্রামের কামরুলের বিয়ে হয়। তাদের সন্তান না হওয়ায় ডাক্তার দেখানোর নাম করে কামরুল ১৫ এপ্রিল সালমাকে ভারতে নিয়ে যায়। রোববার কামরুল ভারত থেকে ফিরে এসে তাদের জানায়, সালমাকে হারিয়ে ফেলেছে সে। এ সময় তার আচরণে সন্দেহ হলে পুলিশে অভিযোগ দেওয়া হয়।