সিএনএমঃ
ঢাক মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে জনমুখী পুলিশি সেবার অনন্য উদ্যোগের মধ্য দিয়ে তিন বছর পূর্ণ করলেন জনাব মোহা. শফিকুল ইসলাম, বিপিএম (বার)। গত ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩৪তম কমিশনার হিসেবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ পুলিশের সুপ্রতিষ্ঠিত এবং সর্ববৃহৎ ইউনিট হলো ডিএমপি। এ সর্ববৃহৎ ইউনিটের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরই স্বচ্ছতা, জবাবদিহিমূলক পুলিশি ব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছেন তিনি।
থানায় জিডি ও মামলা রুজুতে হয়রানিরোধে সিনিয়র অফিসারদের তত্ত্বাবধানে জিডি ও মামলার বিষয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং সেল গঠন করেন। ফলে সঠিকভাবে জিডি ও মামলা তদন্তে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হয়।
তিনি নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে এবং তাদের দ্রুত সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অধীনে কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) ও হটলাইন উদ্বোধন করেন।
এ সময়ে তিনি রাজারবাগ পুলিশ লাইনস্- এ সম্প্রসারিত পুলিশ শপিং মল, ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও নাগরিক সেবা কেন্দ্র, ট্রাফিকের নবসৃষ্ট লালবাগ ও গুলশান বিভাগের কার্যালয়সহ, উত্তরা আঞ্চলিক পুলিশ লাইনস্ এর উদ্বোধন করেন।
এছাড়াও রাজারবাগ, ডেমরা পুলিশ লাইনস্ ও উত্তরা আঞ্চলিক পুলিশ লাইন্সের পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত ও সামাজিক বনায়নের লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় বৃক্ষ রোপণসহ ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশা নির্মূলে পরিচ্ছন্নতা অভিযান মত কার্যক্রম গ্রহণ করেন তিনি।
নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অনলাইন জিডি চালুসহ প্রতিটি থানায় স্থাপিত নারী, শিশু, বয়ষ্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্কের কার্যক্রম বেগবান করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি।
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) মহোদয়ের ঘোষিত পাঁচ মূলনীতি -দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, মাদক নির্মূল, অমানবিক ও অপেশাদার আচরণ বন্ধ করা, বিট পুলিশিং ও পুলিশের সার্বিক কল্যাণ যথাযথভাবে প্রতিপালনের জন্য ডিএমপির সকল পুলিশ অফিসার ও ফোর্সকে নির্দেশনা প্রদান করেন ডিএমপি কমিশনার।
করোনা অতিমারীর কারণে ২০২০ সাল ছিল পুলিশের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জিং বছর। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে পুলিশি সেবা অব্যাহত রাখতে হয়েছে। ডিএমপি কমিশনারের নেতৃত্বে বৈশ্বিক এই করোনাকালীন দুঃসময়ে জনগণের সেবা নিশ্চিত করাসহ অসহায়, দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করে ঢাকা নগরবাসীর নিকট মহানগর পুলিশের ব্যাপক পজেটিভ ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা পায়।
তিনি করোনা সংক্রমণ রোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম, শহরের রাস্তায় জীবানুনাশক ছিটানো, করোনায় মৃত্যুবরণকারী মৃতদেহের সৎকার ও নামাজে জানাযাসহ লাশ দাফন করার ব্যবস্থাও গ্রহণ করেন।
এ সময়ে জনগণকে সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যদের সেবা নিশ্চিত করাও ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। করোনায় আক্রান্ত ডিএমপির পুলিশ সদস্যদের সেবা নিশ্চিত করার জন্য দিয়াবাড়ী উত্তরা আঞ্চলিক পুলিশ লাইনস্-এর ব্যারাককে করোনা আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
উন্নত দেশের উপযোগী করে ডিএমপিকে গড়ে তোলার জন্য নিরলস কাজ করে চলেছেন পরিবর্তনের অগ্রদূত কর্মবীর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, বিপিএম (বার)।
পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, বিপিএম (বার) এর সুচিন্তিত পরিকল্পনা, সুনির্দেশনা ও গতিশীল নেতৃত্বের ফলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্য ইতিহাস হয়ে থাকবে।
তিনি ১৯৮৯ সালে ৮ম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন।
চাকরি জীবনে তিনি- পুলিশ সুপার হিসেবে নারায়ণগঞ্জ, পটুয়াখালী, সুনামগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি চট্টগ্রাম রেঞ্জ, ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ, এন্টি টেররিজমের প্রধান (অ্যাডিশনাল আইজিপি), অ্যাডিশনাল আইজিপি (এইচআরএম) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও অ্যাডিশনাল আইজিপি সিআইডি হিসেবে দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। কর্মজীবনে তাঁর পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার জন্য তিনি একাধিকবার বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) পদকে ভূষিত হন।
মোহা. শফিকুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা থানার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।