সিএনএম প্রতিনিধিঃ
বগুড়ায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা কাভার্ডভ্যান ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। ডাকাতি হওয়া ইফাদ গ্রুপের প্রায় ৪৫ লাখ টাকার মালামালসহ কাভার্ডভ্যান উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা।
মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৩টায় জেলা গোয়েন্দা কার্যালয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সারিয়াকান্দি উপজেলার মৃত যুক্তরাজ আলী খানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০), ঢাকার মৃত সানাউল্লাহ মিয়ার ছেলে সোলাইমান মিয়া (৪২), মাগুরার শালিখা উপজেলার খাদেম আহমেদের ছেলে শামিম আহম্মেদ (৩৮), বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার জহুরুল ইসলামের ছেলে ইয়াছিন আলী (২৭), বরগুনা সদর উপজেলার মৃত ওয়ার্জেত আলীর ছেলে দুলাল মিয়া ড্রাইভার (৪০) ও নরসিংদীর মাসুদুর রহমানের ছেলে রাসেল খান সুজন (৪০)।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, ডাকাত সদস্য সোলাইমান মিয়ার সঙ্গে ৪ থেকে ৫ বছর আগে কাভার্ডভ্যান চালক দুলালের ঢাকার টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকায় পরিচয় হয়। তখন তারা পাশাপাশি বসবাস করত এবং সোলাইমানও ওই সময় রাজধানীতে চলাচলকারী ভিআইপি ২৭ নম্বর গাড়ির চালক ছিল।
তখন থেকে তারা আন্তঃজেলা ডাকাত দল গঠন করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট এলাকা থেকে কাভার্ডভ্যানসহ বিভিন্ন গাড়ি ডাকাতি করে লুঠ হওয়া মালামাল বগুড়া এলাকায় নিয়ে আসে এবং উত্তরবঙ্গ থেকে কাভার্ডভ্যান ডাকাতি করে লুঠ হওয়া মালামাল ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট এলাকায় নিয়ে যায়।
২২ এপ্রিল ঢাকার আশুলিয়া থানা এলাকার ইফাদ কোম্পানির গোডাউন থেকে ডাকাত দলের সদস্য ড্রাইভার দুলাল ও তার হেলপার রাশেদ মালামাল কাভার্ডভ্যানে নিয়ে সিলেটের উদ্দ্যেশে বের হয়। রাস্তার মধ্যে ডাকাত সর্দার জাহাঙ্গীর এবং ড্রাইভার দুলাল পরস্পর যোগাযোগ করে নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানা এলাকা থেকে দুজন ডাকাত রাতে যাত্রী বেশে গাড়িতে উঠে।
ডাকাত সদস্য ও ড্রাইভার দুলাল হেলপারকে বুঝতে না দিয়ে কাভার্ডভ্যানসহ কিশোরগঞ্জ শহরে গিয়ে রাশেদকে কৌশলে ম্যাঙ্গো জুসের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে পান করালে সে অচেতন হয়ে যায়। পরে তারা কাভার্ডভ্যানটি সিলেট না নিয়ে টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী এলাকায় নিয়ে আসে এবং ঢাকা টাঙ্গাইল রোডের পাশে ঘুমন্ত অবস্থায় হেলপার রাশেদকে ফেলে দিয়ে বগুড়া জেলার শিবগঞ্জে মালামাল বিক্রির জন্য আনলোড করে ক্রেতার অপেক্ষায় থাকে।
সোমবার দিবাগত রাতে বগুড়া ডিবি পুলিশ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শিবগঞ্জ থানার শ্যামপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে লুট হওয়া মালামাল উদ্ধার করে। ওই সময় ইয়াছিন নামের এক ডাকাত সদস্যকেও গ্রেফতার করা হয়।তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই উপজেলার মোকামতলা এলাকা এবং ধুনট থানার পূর্ব ভরোনসাকি অফিসারপাড়া এলাকা থেকে ডাকাত দলের সর্দার জাহাঙ্গীর আলমসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের অন্যান্য সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী চান্দাইকোনা বাজার হইতে লুণ্ঠিত কাভার্ডভ্যান (ঢাকা মেট্রো-উ-২২-৭২৪৩) উদ্ধার করা হয়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল ও মিডিয়া মুখপাত্র) ফয়সাল মাহমুদ জানান, গ্রেফতার হওয়া সবাই পেশাদার ডাকাত চক্রের সদস্য। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে। প্রচলিত আইনে মামলা দায়ের করা হবে।