সিএনএমঃ
সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা বন্ধে মানুষকে সচেতন করতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক দিয়ে নির্মিত হয়েছে একটি “রোবট দানব”।
জেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নির্মিত সৈকতের সুগন্ধা-সীগাল পয়েন্টে প্রদর্শন করা হচ্ছে প্লাাস্টিক বর্জ্যে তৈরি এ দানব ভাস্কর্যের। প্লাস্টিক দানবটি তৈরি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের একদল শিল্পী। প্রায় ১০ মেট্রিক টন সমুদ্রে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক দিয়ে ৬২ ফুট উচ্চতার এ দানবটি তৈরি করা হয়েছে।
বুধবার সকাল ১০ টায় এই রোবট ভাস্কর্যয়ের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহমেদ,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. ইয়ামিন হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী, বিদ্যানন্দের গভর্নিং বডির সদস্য জামাল উদ্দিন, জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন বাহারী প্রমুখ।
সরেজমিন সৈকতে দেখা যায়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সীগাল পয়েন্টের বালিয়াড়িতে দাঁড়িয়ে আছে প্লাস্টিকের তৈরি এক দানব রোবট। যে দানবটি রক্ত-মাংসহীন প্রতীকী হলেও যার হিংস্র থাবায় প্রতিনিয়ত ক্ষত-বিক্ষত মানবদেহ, প্রকৃতি ও প্রাণবৈচিত্র।
আয়োজক সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই সমাগম ঘটে লক্ষাধিক পর্যটকের। সৈকতের বালিয়াড়ি ও সাগরের পানিতে প্লাস্টিক পণ্য সামগ্রীর বর্জ্য ফেলার কারণে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে দূষণ এবং হুমকির মুখে পড়ছে সামুদ্রিক জীব ও মানবজীবন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন তাঁর বক্তব্যে বলেন প্লাস্টিক যে দানবের মতো সমুদ্র ও জনজীবন ধ্বংস করছে এবং ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকা এই ভয়াবহতা দ্রুতই রুখে দিতে হবে, এই সতর্কতা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার জন্যই ভাস্কর্য প্রদর্শনীর এই উদ্যোগটি নেয়া হয়েছে। আশা করছি এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে মানুষ প্লাাস্টিক ব্যবহারের আরো সতর্ক হবে।
ভাস্কর ও শিল্পী আবীর কর্মকার জানান, দানব তৈরীতে তারা প্লাস্টিক বর্জ্যরে পাশাপাশি ব্যবহার করেছেন কাঠ, পেরেক ও আঁঠা (গাম)সহ আরও কয়েকটি উপকরণ।
গত ৭ নভেম্বর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের জন্য ‘প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোর’ ও স্থানীয়দের জন্য ‘প্লাাস্টিক এক্সেঞ্জ মার্কেট’ উদ্বোধন করা হয়েছে। যেখানে প্লাস্টিক বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়া খালি পাত্র, বোতল ও পলিথিনের প্যাকেটের বিনিময়ে যে কেউ নিতে পারবেন চাল, ডাল, তেল, চিনি ও লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং পর্যটকরা জিতে নিবেন বই,কলম,ক্যাপ,ব্যাগ সহ বিভিন্ন উপহার।
এই কার্যক্রম থেকেই মূলত ১০ মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ হয়।