পাকিস্তানের বিরোধী নেতা ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) দুইজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে গ্রেপ্তারে তাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এছাড়া আরও একজন নেতাকে গ্রেপ্তারে তার বাড়ির বাইরে অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পাশাপাশি সতর্কবার্তা দিয়ে তিনি বলেছেন, সরকার যদি অবিলম্বে দমনমূলক নীতি থেকে সরে না আসে, সেক্ষেত্রে বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তান নৈরাজ্য শুরু হবে।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানের দৈনিক দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, বুধবার রাতে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা ও পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী হাম্মাদ আজহার ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধামন্ত্রীর জ্যেষ্ঠ সহকারী উসমান দারের আবাসিক ভবনে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু বাড়িতে না থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এছাড়া রাজধানী ইসলামাবাদে দেশটির সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদের বাড়ির সামনে গত সোমবার থেকে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। তিনি বাড়িতে এলেই গ্রেপ্তার করা হবে তাকে।
গত সোমবার পিটিআিইয়ের নেত্রী ও সাবেক মানবাধিকারমন্ত্রী শিরিন মাজারিকেও গ্রেপ্তার করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে গ্রেপ্তার করার কিছুক্ষণ পরই ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে।
পুলিশি অভিযানের পর এক টুইটবার্তায় হাম্মাদ আজহার বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘ক্ষমতা থাকলে আমাদের থামিয়ে দেখান।’
পিটিআইয়ের রাজধানী অভিমুখী লংমার্চ (আজাদি মার্চ) ঠেকাতেই সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে পৃথক টুইটবার্তায় ইমরান খান বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ পাকিস্তানের প্রতিটি নাগরিকের অধিকার; কিন্তু পাঞ্জাব ও ইসলামাবাদে যেভাবে পিটিআইয়ের নেত-কর্মীদের ধরপাকড় করা হচ্ছে— তা ক্ষমতাসীন পিএমএলএন (পাকিস্তান মুসলীম লীগ- নওয়াজ) সরকারের ফ্যাসিবাদি নীতির প্রমাণ। অতীতেও এমন বহু প্রমাণ তারা দিয়েছে।’
ক্ষমতাসীন সরকারকে ‘জুয়াচোর’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন ‘ইতোমধ্যে অর্থনীতি তলানিতে ঠেকেছে। আমি সব জুয়াচোর ও তাদের দোসরদের সতর্কবার্তা দিয়ে বলতে চাই যে, এ মুহূর্তে যে কোনো অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদি পদক্ষেপ দেশকে চরম নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যাবে।’
অবিলম্বের নতুন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে রাজধানী অভিমুখে লংমার্চ করছেন ইমরান খান ও তার দল পিটিআইয়ের সমর্থকরা। এ কর্মসূচি ঠেকাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ -নওয়াজের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার।
বুধবার লংমার্চ শুরুর পর বর্তমানে ইসলামাবাদের ডি-চক এলাকার পথে রয়েছে ইমরান খানের গাড়িবহর। গতকাল রাজধানী অভিমুখে আসার পথে ৫০ কিলোমিটার দূরে যাত্রাবিরতি করেন ইমরান। সেখানে তিনি বলেন, আমদানি করা সরকার কর্তৃক নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করা পর্যন্ত তিনি এবং তাঁর সমর্থকরা ডি-চক খালি করবেন না।