করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের পর থেকে সারা বিশ্বে ৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এই তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এতো বিশালসংখ্যক প্রাণহানিকে দুঃখজনক মাইলফলক বলেও অভিহিত করেছে সংস্থাটি। বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথমবারের মতো ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপরই তা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ভাইরাসের এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের অধিকাংশেরই কেবল হালকা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না।
করোনার বি.১.১.৫২৯ নামক এই ভ্যারিয়েন্টকে গ্রিক বর্ণমালার ১৫ নম্বর অক্ষর অনুযায়ী ‘ওমিক্রন’ নামকরণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পরে গত ২৬ নভেম্বর ওমিক্রনকে ‘উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে সংস্থাটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ইনসিডেন্ট ম্যানেজার আবদি মাহমুদ মঙ্গলবার জানান, নভেম্বরের শেষে ওমিক্রনকে ‘উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার পর থেকে বিশ্বজুড়ে ১৩ কোটি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রাণ হারিয়েছেন ৫ লাখ মানুষ।
এমনকি ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের ডেল্টা ধরনকে সরিয়ে করোনা সংক্রমণের মূল প্রভাবকেও পরিণত হয় ওমিক্রন। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত এই ভ্যারিয়েন্টটি ডেল্টা বা ভাইরাসের অন্যান্য ধরনের তুলনায় অনেক বেশি সংক্রামক। এমনকি অনকে টিকা নেওয়ার পরও এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হচ্ছেন। যদিও এতে আক্রান্তদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থতার সংখ্যা কম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলোতে আলোচনার সময় আবদি মাহমুদ আরও বলেন, ‘করোনার বিরুদ্ধে কার্যকর ভ্যাকসিনের এই যুগে (ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে) পাঁচ লাখ মানুষ মারা গেল। এটা আসলেই চিন্তার বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘যারা বলছেন- ওমিক্রন করোনার ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় দুর্বল, তারা হয়তো এই পয়েন্টটি ভুলে গেছেন যে- ভাইরাসের এই ধরনটি শনাক্তের পর থেকে পাঁচ লাখ মানুষ মারা গেছেন।’
ডব্লিউএইচও’র কোভিড-১৯ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান মারিয়া ভ্যান কেরখোভ বলেছেন, আমরা এখনও চলমান মহামারির মাঝামাঝি পর্যায়ে আছি। তবে আমি আশা করি আমরা হয়তো মহামারির অবসানের কাছাকাছি চলে এসেছি। বিশ্বের অনেক দেশ এখনও ওমিক্রনে সংক্রমণের চূড়া অতিক্রম করেনি।
তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে বিশ্বে করোনায় প্রাণহানি বেড়েছে এবং ভাইরাসের বিপজ্জনক আচরণ অব্যাহত থাকবে।