সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে রায়হান আহমদ হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। বুধবার (১১ মে) মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলার বাদী ও রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী সাক্ষ্য দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নওশাদ আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আজ বাদীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। পরে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাদের প্রস্তুতি নেই বলে সময় চান। আদালত তাদের এক দিন সময়ে দিয়েছেন। আগামীকাল তারা জেরা করবেন। জেরা শেষ হওয়ার পর আরও দুজন সাক্ষী স্ট্যান্ডবাই আছেন, তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। এই মামলার ৬৯ জন সাক্ষী আছেন।
পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ আল নোমানের ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ এই বিষয়ে স্টেট ডিফেন্স করবে।
এর আগে মঙ্গলবার (১০ মে) মামলার বাদী নিহত রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নীকে এজলাসে উঠানোর পর আসামি পক্ষের আইনজীবী সময় প্রার্থনা করেন। এ সময় তারা রিট পিটিশন দাখিলের কপি আদালতে জমা দিলেও আসামি আদালতে হাজির করতে দেরি করায় এবং একজন আইনজীবী মারা যাওয়ায় কোর্ট রেফারেন্সের কারণে সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ এক দিন পিছিয়ে আজ নির্ধারণ করেন আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে নগরীর আখালিয়া নেহারিপাড়ার যুবক রায়হান আহমদকে নির্যাতন করে পুলিশ। ১১ অক্টোবর সকালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার মামলা দায়ের করেন। ২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয় মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই।
অভিযোগপত্রে ছয় আসামির মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবরসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে কারাবন্দি এবং এক আসামিকে (আব্দুল্লাহ আল নোমান) পলাতক দেখানো হয়। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার নথি পর্যালোচনা শেষে অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয় এবং একমাত্র পলাতক আসামি নোমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
পরবর্তীতে গত মাসের ১৮ এপ্রিল প্রায় দেড় বছর পর সিলেট মহানগর দায়রা জজ মো. আব্দুর রহিমের আদালতে ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে সিলেটে পুলিশি নির্যাতনে রায়হান আহমদ হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়।