জর্ডানে ৭ বছর প্রবাস জীবনে অনেক কষ্ট করে কিছু টাকা জমিয়ে দেশে ফেরেন পারুল আক্তার (৩৫)। কষ্টার্জিত সেই টাকা দিয়ে প্রতিনিয়ত জুয়া খেলতেন পারুলের স্বামী শান্ত মল্লিক (২৮)। জুয়া খেলে টাকা নষ্ট করা নিয়ে প্রায়ই পারুল ও শান্তর মধ্যে ঝগড়া হতো। সর্বশেষ জুয়া খেলতে বাধা দেওয়ায় পারুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে শান্ত।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার একটি বাসা থেকে পারুল আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলা তদন্তের ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৯ মার্চ) শরীয়তপুরের পালং থানা এলাকা থেকে ঘাতক স্বামী শান্ত মল্লিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার (২০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে অবস্থিত সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (এলআইসি) খায়রুল আমিন।
খায়রুল আমিন বলেন, পারুল আক্তার প্রায় ৭ বছর জর্ডানে চাকরি করে টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন দাড়াইল এলাকায় নিজ নামে জমি কিনে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিল। জর্ডানে থাকার সময়ে শান্তর বোন তামান্নার সঙ্গে পারুলের সুসম্পর্কের সুবাদে তার সঙ্গে পারুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় ৭ মাস আগে দুই লাখ টাকা দেনমোহরে শরিয়াহ অনুযায়ী তাদের বিয়ে হয়।
তিনি বলেন, শান্ত বিদেশে যাওয়ার কথা বলে পারুল আক্তারের কাছ থেকে নগদ এক লাখ টাকা ও পাঁচ ভরি সোনা নিয়ে নেশা করে ও জুয়া খেলে তা শেষ করে ফেলে। বেশ কিছুদিন পর পারুল শান্তর বিদেশ যাওয়া এবং তার কাছ থেকে নেওয়া টাকা ও সোনার বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়।
তিনি আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পারুল তার কষ্টার্জিত টাকার হিসাব চাইলে ফের উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে পারুল আক্তারের গলায় দড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘরের দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যায় স্বামী শান্ত মল্লিক। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলা তদন্তের ধারাবাহিকতায় শনিবার শরিয়তপুরের পালং থানা এলাকা থেকে ঘাতক স্বামী শান্ত মল্লিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলমান বলেও তিনি জানান।