ফরিদপুরের সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামানকে ঢাকা আর্মড পুলিশ হেডকোয়ার্টারে বদলি করা হয়েছে। বদলির আদেশে তাকে আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের আদেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (০১ এপ্রিল) এ আদেশ জারি করা হয়।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) সুমিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় ওসি আশিকুজ্জামানের বদলি আদেশ এসেছে। তবে এটা শাস্তি নয়, নিয়মিত বদলির আদেশ। আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে তাকে ঢাকায় আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন হেড কোয়ার্টারে যোগদানের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সালথা থানার ওসি মো. আশিকুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আমি বদলির আদেশের কপি এখনো হাতে পাইনি। তবে আদেশের বিষয়টি মৌখিক শুনেছি।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ জেলার ৬ নং আমলি আদালতে ওসি আশিকুজ্জামান ও একই থানার উপ-পরিদর্শক হান্নানের বিরুদ্ধে মারপিট, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেন সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুরাদ মোল্লা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মুরাদ মোল্লা গট্টি ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ডের তিনবারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য। ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনের আগে সালথা থানার ওসি বিভিন্ন সময় তার কাছে টাকা দাবি করেন। দাবি করা টাকা না দিলে তাকে নির্বাচন করতে দেবেন না বলে ভয়ভীতি দেখায়। ইউপি সদস্য বাধ্য হয়ে ওসিকে ৭৫ হাজার টাকা দেন। পরবর্তীতে ওসি তার কাছে আরও এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় ক্ষোভে ওসি তাকে তিনটি মিথ্যা মামলায় আসামি করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ১৪ মার্চ রাত অনুমান ১টার দিকে পূর্ব আক্রোশের জেরে তার (মুরাদ) ভাই জিহাদকে ঘরে ঘুমানো থাকা অবস্থায় ওসি তার অধিনস্ত কিছু অফিসার ও কনস্টেবল দিয়ে কোনো মামলা বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া জিহাদকে সালথা থানায় নিয়ে যায়। মুরাদ পরদিন (১৫ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে সালথা থানায় গিয়ে থানার হাজত খানায় মোট ৮ জন লোককে দেখতে পান।
সেদিন (১৫ মার্চ) সকাল অনুমান ১০টার দিকে ওসি তার বাস ভবন থেকে অফিসে আসার পথে মুরাদের সঙ্গে দেখা হয়। তখন মুরাদ ওসিকে তার (মুরাদের) ভাইকে কেন ধরে এনেছেন, কি অপরাধ করেছে। ওসি অপরাধের কথা না বলে তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য মুরাদের কাছে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন এবং বলেন, টাকা না দেওয়া হলে তার (মুরাদের) মতো তার ভাইকেও ৩টা মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করে দেবে। আমি চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমাকে গ্রেফতারের ভয় দেখালে আমি থানা থেকে চলে আসি।
অভিযোগে আরও বলা হয়, মুরাদ ওসির দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দিলে তার হুকুমে এস.আই হান্নান আমার ভাই জিহাদকে থানা হাজত খানা থেকে বের করে ভিন্ন রুমে নিয়ে রুমের জানালার সঙ্গে আমার ভাইয়ের হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে শক্ত লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। ওই দিন (১৫ মার্চ) সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭টার দিকে তার ভাই জিহাদকে মিথ্যা মামলায় আসামি করে আদালতে প্রেরণ করে। ওই মামলায় গত ২৩ মার্চ জামিনে মুক্তি পেলে তার (জিহাদ) শরীরের আঘাত দেখে এবং সে উক্ত আঘাতের কারণে স্বাভাবিকভাবে চলা ফেরা করতে না পারায় তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।