সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আমি একান্তভাবে সিলেটের মানুষ। প্রাপ্তির একটি নিয়ম আছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের গুণীশ্রেষ্ঠ সম্মাননা পেয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। নিজের জন্মস্থানে এমন একটি সম্মাননা গৌরবের। এই যে আমাকে সম্মান জানাচ্ছেন, আমি সেই মাহাত্ম্যের কাছে মাথা নত করি। আমার ভুলত্রুটি সব মাফ করে দেবেন।
বুধবার (১৬ মার্চ) রাতে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি ঘরের সামনে সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আজীবন সুকীর্তির স্বীকৃতি স্বরূপ গুণীশ্রেষ্ঠ সম্মাননা পেয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রাত ৮টায় আবুল মাল আবদুল মুহিত অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হলে সিলেট মহানগর পুলিশের বাদক দল তাকে অভ্যর্থনা জানায়। এরপর মঞ্চে মেয়র, কাউন্সিলরসহ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী গুণীশ্রেষ্ঠ সম্মাননা স্মারক হিসেবে তার হাতে শতবর্ষী আলী আমজদের ঘড়ির স্বর্ণখচিত র্যাপলিকা আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে আবুল মাল আবদুল মুহিত তার বক্তব্যে নানা স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, আমরা ১৪ জন ভাই-বোন। আপনারা জানেন আমি এই দেশের বৃদ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। এই বছরের জানুয়ারি মাসে আমার বয়স ৮৮ বছর হয়েছে। আমাকে দীর্ঘ জীবন দান করায় মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। এমন অনুষ্ঠানে কি বক্তব্য দেওয়া যায়? একটি হলো প্রস্তুতি নিয়ে বক্তব্য দেওয়া। আরেকটি হলো উপস্থিত পরিস্থিতি বিবেচনায় বক্তব্য প্রদান করা। আমি দ্বিতীয় পদ্ধতিটি অনুসরণ করলাম। এতে অবশ্য বেশি স্মৃতিচারণ করতে হয়। আমি স্মৃতিচারণ করতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করবো।
ছোটবেলার স্মৃতিচারণায় গ্রামীণ জীবন থেকে শহর জীবনের নানা দিক তিনি তুলে ধরেন। আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ছোটবেলার আনন্দময়, স্বাধীনতার দিনগুলো খুবই উপভোগ্য ছিল। সেইসব দিনের সুখকর স্মৃতির স্মরণে আজকে সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। সিলেটের পরিবেশেই আমার জন্ম। আমার বেড়ে ওঠা। আমি গর্ববোধ করি এখানে জন্মে। এখান থেকে অনেক জ্ঞানীগুণীর জন্ম হবে। আজকে সিলেট নগরে আমি একজন অতিথি। এটা একটা গর্বের বিষয়। নিজের জন্মস্থানে নিজে এমন একটি সম্মান পাওয়া গর্বের।
সিলেটকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থান উল্লেখ করে তিনি বলেন, জন্মভূমির প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। সিলেটে ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে হযরত শাহজালাল (রহ) এসেছিলেন। আমরা বেশিরভাগ মানুষই তার মাধ্যমে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেছি। ধর্মাচার পালন করেও আসছি। আমাদের এখানে অন্যান্য ধর্মের আনুষ্ঠানিকতাও সমানভাবে পালিত হয়। ধর্মীয় সম্প্রীতির ঐতিহ্য বহু পুরোনো।
অনুষ্ঠানে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য দেন নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী।