যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে মারধর ও নির্যাতনের অপরাধে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় করা মামলায় চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শামসুদ্দোহার (৪০) জামিন দেননি আদালত।
সোমবার (৭ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুরের জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সেলিম মিয়া তার জামিন নামঞ্জুর করে পুনরায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ফরিদপুর জজ আদালতের আইনজীবী শাহ মো. আবু জাফর এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এর আগে নিম্ন আদালত ওই কর্মকর্তার জামিন নামঞ্জুর করলে তিনি আদেশের বিরুদ্ধে দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন। পরে দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সেলিম মিয়া তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, স্ত্রীর করা মামলায় গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শামসুদ্দোহাকে ঢাকার রাজাবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে গুলশান থানা পুলিশ। পরে তাকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরে আনা হয়।
মো. শামসুদ্দোহা গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার পশ্চিম গোপীনাথপুর গ্রামের নুরুদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। ঢাকার খিলক্ষেত এলাকার বিকান লেকসিটি, কনকর্ড টাওয়ারে তার একটি ফ্ল্যাট ছিল। ছুটিতে তিনি ওই বাসায় অবস্থান করতেন।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, পুলিশ পরিদর্শক শামসুদ্দোহা চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত। তার স্ত্রী ফারজানা খন্দকার তুলির করা নারী নির্যাতন মামলায় তাকে ঢাকার রাজাবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
ফারজানা খন্দকার তুলি অভিযোগপত্রে জানান, ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট পারিবারিকভাবে শামসুদ্দোহাকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত তুলি তার ফরিদপুরের বাবার বাড়িতেই অবস্থান করেন। পরে স্বামীর চাকরির সুবাদে যশোরে বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েক দিন পর থেকে স্বামী শামসুদ্দোহার আচরণে পরিবর্তন লক্ষ করেন তিনি।
ওই সময় জানতে পারেন অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িত তার স্বামী। এর প্রতিবাদ করলে স্ত্রীর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাতেন শামসুদ্দোহা।
তুলি আরও বলেন, ২০২০ সালের শুরুতে প্রমোশনের জন্য তুলির কাছে ৭০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন শামসুদ্দোহা। এ টাকা তার (তুলির) বাবার কাছ থেকে এনে দিতে বলেন। ওই সময় ১৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তাতে খুশি হননি। এরপর আরও নির্যাতন বাড়তে থাকে। প্রতিদিন নেশা করে এসে আমাকে মারপিট করতেন। নির্যাতন সইতে না পেরে বাবার বাড়ি ফরিদপুরে চলে আসেন তিনি।
পরে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় তার স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক দাবি, মারপিট ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলাটি করেন।