শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ০৮:২৪ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
"ফটো সাংবাদিক আবশ্যক" দেশের প্রতিটি থানা পর্যায়ে "ক্রাইম নিউজ মিডিয়া" সংবাদ সংস্থায় ১জন রিপোর্টার ও ১জন ফটো সাংবাদিক আবশ্যক। আগ্রহী প্রার্থীরা  যোগাযোগ করুন। ইমেইলঃ cnm24bd@gmail.com ০১৯১১৪০০০৯৫
সংবাদ শিরোনাম ::
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ গড়ার নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে: ফখরুল ইয়াবাসহ ২জন মাদকসেবীকে আটক সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই : আব্দুস সালাম পুলিশকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়া আসামি গ্রেপ্তার থানা থেকে লুট করা পিস্তলসহ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী গ্রেফতার আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে ছাত্রদলের সড়ক ইশরাকের শপথ নেয়ার আইনি কোনো সুযোগ ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ ভিটিকান্দি ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক শহিদুল্লাহ গ্রেপ্তার দেড় মাসে ও ধর্ষিতার মামলা নেয় নি যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশ ন্যায় বিচার পেতে বিভিন্ন দপ্তরে শিশু সন্তান নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে

মশার উৎপাত, ঢাকাবাসী দেখছে কেবল ‘আশ্বাস’

  • আপডেট সময় রবিবার, ৬ মার্চ, ২০২২, ৯.০৯ পিএম
  • ১৯১ বার পড়া হয়েছে

‘দুই সিটি করপোরেশনের কোনো উদ্যোগ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। নগরবাসীর পক্ষ থেকে ঢাকার দুই মেয়রের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনারা মশার উপদ্রব কমাতে জরুরিভাবে উদ্যোগ নিন।’

রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন দোকান থেকে মশার কয়েল কিনছিলেন। এ সময় উপস্থিত অন্যদের সঙ্গে আলাপ করছিলেন তিনি। আলোচনার প্রধান বিষয় ‘মশার যন্ত্রণা’। সবার কথায় একটা বিষয় উঠে আসে- রাজধানীতে হঠাৎই বেড়েছে মশার উপদ্রব; কোনোভাবেই এ থেকে মুক্তি পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, স্থির হয়ে কোথাও বসা বা কিছুই করা যায় না। মশা কামড়াতেই থাকে। আগের চেয়ে মশার উৎপাত কয়েক গুণ বেড়েছে। মশা বেড়ে যাওয়ায় কয়েলের দামও বেড়েছে। আগে চায়না কয়েল ছিল ৭০ টাকা প্যাকেট, সেটি এখন ৮০ টাকা। যদিও কয়েলে খুব একটা কাজ হয় না।

বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর সব এলাকার চিত্রই এরকম। সড়ক থেকে ঘর, স্টেশন থেকে গণপরিবহন সর্বত্রই মশার উপদ্রব। মশার গুনগুন শব্দের সঙ্গে হুল ফোটানো নিত্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

dhakapost

সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মার্চ মাসে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে মশার ঘনত্ব আরও চার গুণ বাড়বে। ওই গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, বছরের এ সময়ে মশার জীবনচক্রের গতিশীলতা বেড়ে যায়। এ সময়ে মশা ডিম বেশি পাড়ে। গত বছরের জুন-জুলাইয়ের তুলনায় এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে এসে মশার ঘনত্ব প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

মশার উপদ্রব নিয়ে কথা হয় রাজধানীর মালিবাগ এলাকার বাসিন্দা নিলুফা আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘরে ছোট বাচ্চা আছে, যে কারণে কয়েল-অ্যারোসল কিছুই দেওয়া যায় না। সারাদিন মশারি টাঙিয়ে বাচ্চাকে রাখতে হয়। ঘরের কোথাও স্থিরভাবে বসা যায় না। মশার কামড়ে হাত-পা কালো হয়ে যায়।

একই অভিযোগ জানিয়ে এলিফ্যান্ট রোডের বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সিটি করপোরেশনের যারা মশার ওষুধ ছিটায়, তাদের কখনো দেখি না। তারা কখন এসে মশার ওষুধ ছিটায়?

সাধারণ নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরবাসী। দুই সিটি করপোরেশনের কোনো উদ্যোগ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। নগরবাসীর পক্ষ থেকে ঢাকার দুই মেয়রের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনারা মশার উপদ্রব কমাতে জরুরিভাবে উদ্যোগ নিন।

গত ৩ মার্চ ডেঙ্গু ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন। সভায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম নাগরিকদের সচেতনতার কথা বলেন। মশামুক্ত নগর গড়তে বদ্ধপরিকর বলেও জানান তিনি।

dhakapost

সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, এডিস মশাসহ অন্যান্য মশা নিধনে চলতি বছরের জন্য পর্যাপ্ত কিটনাশক মজুত রয়েছে।

মশক নিধন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কিউলেক্স মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে কাজ চলছে। এখানে কারও বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) কিউলেক্স মশার মোট ৯২৫টি হটস্পট শনাক্ত করা হয়। এসবের মধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সাতারকুল। এরপর রয়েছে মিরপুর। ডিএনসিসির ১০টি অঞ্চলে মশা নির্মূলে নিয়মিত কর্মীর সংখ্যা ৫৫০। পাশাপাশি আরও কিছু অনিয়মিত কর্মীসহ সর্বমোট মশককর্মী হিসেবে কাজ করছেন প্রায় ১ হাজার জন।

অন্যদিকে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে গতিশীল করার লক্ষ্যে গত বছর বেশকিছু নতুন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কিনেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। তাদের দাবি, তারা ৭৫টি ওয়ার্ডেই নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে প্রতি ওয়ার্ডে ১৪ জন করে ৭৫টি ওয়ার্ডে মোট ১ হাজার ৫০ জন কর্মী লার্ভিসাইডিং, এডাল্টিসাইডিং এবং সমন্বয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। মশক নিধনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমাদের কাজ চলমান রেখেছি। তবে এই সময়ে এসে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। তাই আমরাও আমাদের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

জানা গেছে, সর্বশেষ অর্থবছরে মশক নিধনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রায় আট কোটি টাকা কমিয়ে ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখে। যেখানে তার আগের অর্থবছরে ৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে সর্বশেষ অর্থ বছরের বাজেটে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০ কোটি টাকা। যা তার আগের অর্থবছরে ছিল ৫৮ কোটি টাকা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2015-2025
Theme Developed BY ThemesBazar.Com