ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান শহর এবং বন্দরনগরী খেরসনের পতন হয়েছে। ব্যাপক হামলার পর রাশিয়ার সামরিক বাহিনী দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহরটির দখল নিয়েছে বলে শহরের মেয়রের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রথম কোনো বড় শহর হিসেবে খেরসনের দখল নিলো রাশিয়া। এক সপ্তাহ আগে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি জুড়ে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী সর্বাত্মক হামলা শুরু করে এবং ব্যাপক সংঘর্ষের পর বুধবার (২ মার্চ) শহরটির পতন হয়।
খেরসন শহরের মেয়র ইগোর কলিখায়েভ জানিয়েছেন, দেশের অন্যতম প্রধান এই শহরটি দখলে নেওয়ার পর রুশ সেনরা সিটি কাউন্সিল ভবনে প্রবেশ করে এবং শহরে কারফিউ জারি করে।
এর আগে, বুধবারই এই শহরটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছিল রাশিয়া। কিন্তু রাশিয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করে আঞ্চলিক গভর্নর বলেছিলেন, খেরসন চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। অন্যদিকে মেয়র ইগোর কলিখায়েভ জানিয়েছিলেন, আমরা এখনও ইউক্রেন, আমরা এখনও শক্ত অবস্থানে রয়েছি।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী শহর দখলের চেষ্টা করছে। তবে শহরে তীব্র প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছে রুশ সৈন্যরা। অবশ্য বুধবার মধ্যরাতে শহরটি রুশ দখলে চলে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন মেয়র ইগোর কলিখায়েভ।
বিবিসি বলছে, প্রায় ৩ লাখ বাসিন্দার খেরসন শহরটি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দখলে যাওয়া মস্কোর জন্য বড় ধরনের এক বিজয়। রাশিয়ার সৈন্যদের হাতে পতন হওয়া সবচেয়ে বড় শহরও এটি।
একইসঙ্গে সামরিক বাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাঁটিও হবে শহরটি। এই শহর থেকে উপকূল বরাবর আরও ভেতরে এবং পশ্চিমের আরেক বৃহৎ বন্দরনগরী ওডেসার সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। কৃষ্ণ সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এবং একটি শিল্পকেন্দ্র এই খেরসন শহর।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর থেকে প্রতিবেশী ইউক্রেনে সর্বাত্মক রুশ সামরিক অভিযানের কারণে লাখ লাখ ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
হামলা শুরুর পর সপ্তাহ গড়ালেও ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। তবে কিছু কিছু শহরে রুশ সৈন্যদের সঙ্গে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে।