সাভারে চাঞ্চল্যকর বিউটিশিয়ান সীমা আক্তার হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে মূল আসামি সবুজকে (৩০) গ্রেফতার করেছে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
এর আগে একই ঘটনার অপর আসামি শহিদুলকে গ্রেফতার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। তবে হত্যাকাণ্ড একাই ঘটিয়েছেন বলে দাবি সবুজের।
সবুজ নওগাঁর বদলগাছি থানার বরট্ট গ্রামের আলিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি সাভারের উলাইল এলাকায় ভাড়া থেকে দিনমজুরের কাজ করতেন। শহিদুলের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ডিবি পুলিশ জানায়, গত বছরের ২৯ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সাভারের নামাগেন্ডা ময়লার মোড় এলাকায় ভাড়া বাসায থেকে বিউটিশিয়ান সীমা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ১৩ জানুয়ারি শহিদুল ইসলাম নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় সাভার মডেল থানা পুলিশ। এরপর মামলাটি ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে হত্যাকারী সবুজকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, সীমার সঙ্গে সবুজের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে এ সম্পর্ক আরও গভীর হয়। পরে সীমার বাসায় অন্য এক নারীর সঙ্গেও সবুজ শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়। সীমা এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। সবুজ তাকে ৫০০, এক হাজার টাকা করে পরিশোধের কথা দেন।
এরপর ২৮ নভেম্বর সবুজ আবার সীমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়। এ সময় সীমা আবারও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এতে সবুজ ক্ষিপ্ত হয় এবং তাদের মাঝে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে সীমার গলা টিপে ধরে সবুজ। গলা টিপে ধরায় তার মৃত্যু হয়। পরে সীমার বাবা শহীদ মিয়া অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় শহিদুল জড়িত না থাকার বিষয়টি আদালতে স্পষ্ট করেন সবুজ।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থেকেও শহিদুলকে গ্রেফতার করে হাজতে পাঠানোর ব্যাপারে সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা কল লিস্টের সূত্র ধরে শহিদুলকে গ্রেফতার করেছি। ঘটনার দিন সীমার সঙ্গে তিনি শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। তবে হত্যার কথা স্বীকার করেননি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বোঝা যাবে তিনি হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ নভেম্বর সকালে বাসায় ফিরে সীমার রক্তাক্ত মরদেহ দেখে থানায় খবর দেয় স্বামী আরিফুল ইসলাম চয়ন (২৫)। পরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। একইসঙ্গে ১৩ জানুয়ারি শহিদুল ইসলাম নামে একজনকে গ্রেফতার করে হাজতে পাঠায় পুলিশ। নিহত বিউটিশিয়ান সীমা স্থানীয় আরিফুল ইসলাম চয়নের স্ত্রী ও শহীদ মিয়ার মেয়ে।