অবশেষে “হিউম্যান রির্সোস এন্ড হেল্থ ফাউন্ডেশন” নামক সংস্থার উদ্যোগে সৌদি আরব হতে পূর্ণিমা রানী বর্মন পাচারকারীদের হাত হতে মুক্তি পেলোসূত্রে জানা যায় পূর্ণিমা রানী বর্মন নামে এক নারী জীবকা নির্বাহের তাগিদে চাকুরী করার জন্য দালালের মাধ্যমে যোগাযোগ শেষে সৌদিআরব যায়। সেখানে যাওয়ার পরই মেয়েটি জানতে পারে সে একটি অসাধু লোকের চক্রে পড়ে সৌদি আরবে কৌশলে বৈধ ভিসায় পাচার হয়েছে। তার উপর নেমে আসে নানা ধরনের নির্যাতন, তখন ধৈর্য্যে বাদ ভেঙ্গে যাওয়ার পর বাংলাদেশে তার পরিবারের কাছে ঘটনা খুলে বলে তখন তার পিতা দালালদের সাথে বার বার যোগাযোগ করে তার মেয়েকে দেশে এনে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার নানা আকুতি মিনুতী করে এতে রিক্রুটিং এজেন্সী দালালরা পিতা শুকলাল চন্দ্র বর্মন এর নিকট মোটা অংকের টাকা দাবী করে, টাকা দিতে পারলে তার মেয়েকে বিদেশ থেকে ফিরিয়ে এনে পরিবারের হাতে তুলে দিবে। শুকলাল চন্দ্র বর্মন জানান তিনি জেলে সম্প্রদায়ের লোক, তাদের অভাব অনটনের সংসার, কোনমতে নদীতে মাছ ধরে দিন যাপন করে। দালালদের চাহিদা মতো ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা দিতে না পারায় তার মেয়েকে বিদেশে থেকে ফেরত এনে দেয় না। তখন শুকলাল চন্দ্র বর্মন একটি লিখিত অভিযোগ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব, পরাষ্ট্র সচিব,মহা-পুলিশ পরিদর্শক ও হিউম্যান রির্সোস এন্ড হেল্থ ফাউন্ডেশন-সংস্থার বরাবরে লিখিত আবেদনপত্র প্রেরণ করেন। আবেদনে তিনি যাহা উল্লেখ করেন-
আমি শুকলাল চন্দ্র বর্মন এই মর্মে আবেদন করিতেছি যে, ১০ মাস আগে নাছিমা নামে এক মহিলা আমার মেয়েকে ফুসলিয়ে বাসা-বাড়িতে কাজ দেওয়ার কথা বলে ডি.এম.পির কোতয়ালী থানাধীন হোটেল বি-বাড়িয়া আবাসিক-১৯, আকমল রোড, (৩য় তলায়) একটি রুমে নিয়ে যায়। সেখান হতে একদিন পর ডি.এমপির পল্টন থানাধীন নয়া পল্টন, ৫৩,ডি.আই.টি এ এক্সটেশন রোড, (২য় তলা) নয়া পল্টন, ঢাকা এর ডায়মন্ড টুরস এন্ড ট্রাভেলস, সিভিল এভিয়েশন লাইসেন্স নং-১৩২১৯, আমিন এন্ড সন্সস ইন্টারন্যাশনাল, আর.এল-১৪৮৮, মোবাইল-০১৮৩৬৫২৫৪৪৩, ফোন-০২-২২২২২৯১৮১, প্রোপ্রাইটর : মোঃ শাহাপরান ইসলাম এর কাছে নিয়ে যায়। উক্ত মোঃ শাহাপরান ইসলাম গং দেশ বিদেশের এজেন্টেদের সাথে পরামর্শ করে এবং ২৫,০০০/- (পঁচিশ হাজার) টাকা মাসিক বেতন হবে বলে সৌদী আরবে বাসা-বাড়ির কাজের কথা বলে একপর্যায়ে পূর্ণিমা রানী বর্মন, পরিচয় পত্র নং-১৯৩০১৩২৭০০১০০০০৩১, পাসপোর্ট নং-অ০৩৪৭৯১০২, ভিসার শেষ ৫টি ডিজিট-৯৩৩৮৪, তারিখে-২৭/০৬/২০২২ইং ৭.১৫ মিনিটে সময় বাংলাদেশ হতে সৌদে আরবে পূর্ণিমাকে পাঠায়, যাহার ফ্লাইট টিকেট নং-৫২৪৩৩৪০৪৬৫, বিমান নম্বর অজ্ঞাত। সৌদিতে মোঃ শাহাপরান ইসলাম গংরা পাঠানোর পর তাকে নিয়ে বাসা-বাড়িতে কাজ না দিয়ে সেখানকার এজেন্টরা পূর্ণিমা রানী বর্মনকে নিয়ে তাদের একটি আবাসিক বাড়ির অফিসে রেখে সেখানকার বিভিন্ন পুরুষদের সাথে পূর্ণিমা রানী বর্মনকে অবৈধ মেলা-মেশা, যৌণ কাজে লিপ্ত করানোর চেষ্টা করে। এতে পূর্ণিমা রানী বর্মন খারাপ কাজ করতে রাজি না হলে তাকে শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন করে বলে বাংলাদেশী রিক্রুটিং এজেন্সীর মোঃ শাহাপরান ইসলাম গংদের কাছ হতে অনেক টাকা দিয়ে তারা পূর্ণিমা রানী বর্মনকে কিনে নিয়ে গেছে। তাই সে টাকা তুলতে পূর্ণিমা রানী বর্মনকে খারাপ কাজ করানোর জন্য নানা ধরনের নির্যাতন চালাচ্ছে। আমার মেয়ে পূর্ণিমা রানী বর্মন এর কাছে হতে এমন সংবাদ জানার পর আমি নাছিমা ও মোঃ শাহাপরান ইসলাম এর সাথে দেখা করে বিষয়টি বলি। নাছিমা বলে পূর্ণিমা রানী বর্মন এর উপর নির্যাতনের বিষয়টি আমরা দেখতেছি। এরপর হতে প্রায় ৬/৭ মাস আমার মেয়ে পূর্ণিমা রানী বর্মন-এর সাথে আমাদের আর কোন যোগাযোগ হয়নি। আমি নিরুপায় হয়ে পুলিশসহ বিভিন্ন লোকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি ও আদম ব্যাপারীদেরকে বলি পূর্ণিমা রানী বর্মন-এর সাথে আমাদের কথা বলিয়ে দেন তারপরও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই। উল্টো আমি হিন্দু বলে রিক্রুটিং এজেন্সীর মালিক ও দালালরা নানাভাবে আমাকে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে এবং বলে পূর্ণিমা রানী বর্মনকে আনতে হলে রিক্রুটিং এজেন্সীর ক্ষতিপূণ বাবদ ৪,০০,০০০/- (চার লক্ষ) টাকা দিতে হবে নয়তো পূর্ণিমা রানী বর্মন আর কোনদিন বাংলাদেশে আসবে না এরই মধ্যে হঠাৎ প্রায় ১ মাস আগে পূর্ণিমা রানী বর্মন সৌদি হতে ঐ দেশের এক লোকের নম্বর হতে আমার বাংলাদেশী নম্বরে ফোন করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এবং বলে বাবা আমাকে তোমরা বাঁচাও, নইলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। আমি সৌদিতে এসে তোমাদের কাছে আমার নির্যাতনের বিষয়টি জানাইছিলাম বিধায় তারা আমাকে কোন মোবাইল দেয় না বরং একটি রুমে তালা মেরে রাখে। তাদের কথামতো না চললে নানাভাবে শারিরীক মানুষিক নির্যাতন করে। আমাকে কোন বাসা-বাড়ির কাজ দেয় নাই ও এখানে আসার পর কোন বেতনও দেয়নি। মোঃ শাহাপরান ইসলাম গংরা আমাকে সৌদিতে বিক্রি করে দিয়েছে। এখানে আমার মতো অনেক বাংলাদেশী মেয়ে আছে তাদেরকেও মোঃ শাহাপরান ইসলাম, নাছিমা ও আনোয়ার গংরা ঐ সকল মেয়েদের বিক্রি করে দিয়েছে। তাদের দিয়ে এখানে পতিতা ব্যবসা করানো হয়। এখানকার এজেন্টদের কাছে বাংলাদেশী শত শত মেয়ে রয়েছে এদেশের এজেন্টদের বাড়িতে বন্দী অবস্থায় ঐদেশের এজেন্টরা বাংলাদেশের মোঃ শাহাপরান ইসলাম গংদের কাছ হতে যে সকল মেয়েদের এদেশে আনে তাদের প্রথমেই তাদের নির্দিষ্ট দাcnলালের মাধ্যমে মেয়েদের সংগ্রহ করে উক্ত বি-বাড়িয়া আবাসিক হোটেলে নিয়ে রাখে পরবর্তীতে মেয়েদের ফুসলিয়ে হোটেল মালিক কর্মচারী দালালদের সহায়তায় মোঃ শাহাপরান ইসলাম গংদের কাছে নিয়ে যায় এবং বিদেশে পাঠায় মর্মে উল্লেখিত ঘটনার বিষয়ে মানবাধিকার সংস্থা “হিউম্যান রির্সোস এন্ড হেল্থ ফাউন্ডেশন” এর পক্ষ হতে শুকলাল চন্দ্র বর্মনকে সাথে নিয়ে সংস্থার কর্মীগন ডিএমপির পল্টন ও কোতয়ালী থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে পূর্ণিমা রানী বর্মনকে দেশে ফিরিয়ে আনার নানাবিধ প্রচেষ্টার পর অবশেষে মেয়েটি পরিবারের কাছে ফির এল ।