সিএনএম (গাজীপুর) :
গাজীপুরে তিন মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবিতে এক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আবারো বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করেছে।
সোমবার (২৮ আগস্টা) মহানগরীর সদর থানাধীন লক্ষীপুরা এলাকার স্টাইল ক্র্যাফট লিমিটেড এবং ইয়াং ওয়ান্স (বিডি) লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা এ বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
শ্রমিকরা গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দফতরের পাশে ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কের একাংশের ওপর অবস্থান নিয়ে দিনব্যাপী বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে।
কারখানার কর্মী রফিকসহ আন্দোলনরত শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, ওই কারখানায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কর্মী কাজ করেন। তারা গত তিন বেতন ও দু’টি ঈদবোনাসসহ বিভিন্ন ভাতাদি পাওনা রয়েছে। শ্রমিকরা গত কিছুদিন ধরে তাদের সেসব পাওনাদি পরিশোধের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়ে দিন তারিখ নির্ধারণ করলেও শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ করেনি। এ নিয়ে শ্রমিকরা ইতোপূর্বে একাধিকবার বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে। শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে ইতোমধ্যে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শণ অধিদফতরে কারখানার মালিক পক্ষের সাথে শ্রমিকদের সমঝোতা চুক্তি হলেও কোনো সমাধান হয়নি। এদিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ কৌশলে নির্ধারিত সময়ের আগেই পরবর্তী শিপমেন্টের কাজ করিয়ে নেয়ায় কারখানার উৎপাদন কাজ বন্ধ রয়েছে।
তারা আরো জানান, গত মঙ্গলবার প্রতিদিনের মতো কাজে যোগ দিতে শ্রমিকরা কারখানায় আসেন। কিন্তু তারা কর্মকর্তাসহ মালিক পক্ষের লোকজনকে না পেয়ে কারখানায় অবস্থান নেন। এ সময় তারা কাজে যোগ না দিয়ে বকেয়া পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে তারা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারখানা হতে বের হয়ে মিছিল নিয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের দফতরের উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে এসে তারা গাজীপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতি আফিসের সামনে ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কের একাংশের ওপর অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে সড়কের ওই অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুপুরে তারা পুলিশ কমিশনারের বরাবরে বিভিন্ন দাবি সম্বিলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করে। এ সময় আন্দোলনরতরা পুলিশ কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা বিক্ষোভ ও অবস্থানের পর স্মারকলিপি প্রদান শেষে আন্দোলনরত শ্রমিকরা এলাকা ত্যাগ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও মালিকপক্ষ আজও পরিশোধ করেনি শ্রমিকদের বেতন ও দু’টি ঈদবোনাসসহ বিভিন্ন পাওনা।
কারখানাটির ভিতরে গিয়ে কর্মকর্তাসহ মালিক পক্ষের কোনো লোকজনের দেখা পাওয়া যায়নি।
এদিকে বিকাল পর্যন্ত কারখানার শ্রমিকদের বেতন ও দু’টি ঈদবোনাসসহ বিভিন্ন ভাতাদি পাওনার দাবিতে কারখানাটির ভিতরে অবস্থান করতে দেখা যায়।