অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরাজয়ের পর জাতীয় পরিষদে ভাষণ দেন পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফ। শনিবার মধ্যরাতের ভাষণে তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর প্রতিশোধ না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
জাতীয় নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে শাহবাজ বলেন, আমরা প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাই তাদের ত্যাগের জন্য। পাকিস্তান যে সংবিধান ও আইনের ওপর প্রতিষ্ঠিত, তা আবার ফিরে এসেছে। অতীত ভুলে সামনের দিকে যেতে চাই।
তিনি বলেন, যখন সময় আসবে, আমরা বিস্তারিত বলব। এখন জাতির ক্ষত মুছে দিতে চাই। আমরা বিনাদোষে কাউকে জেলে পাঠাব না। আমরা প্রতিশোধ নেব না। আইন ও বিচার প্রক্রিয়া নিজের গতিতে চলবে।
তিনি আরও বলেন, আমি কিংবা বিলাওয়াল অথবা মাউলানা ফজলুর রেহমান আমরা কেউ হস্তক্ষেপ করব না। আইন বহাল থাকবে এবং আমরা বিচার বিভাগকে সম্মান করব। ভাষণের শেষে তিনি নতুন স্পিকারের দায়িত্ব নেওয়া সাদিককে ধন্যবাদ জানান।
শাহবাজের পর ভাষণে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, আমি পুরো জাতি ও এ সংসদকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এ পর্যন্ত কোনো অনাস্থা ভোট সফল হয়নি। এবারই হলো। আজ ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল। আমরা আপনাদের পুরানা পাকিস্তানে স্বাগত জানাই ।
পাকিস্তান তরুণদের উদ্দেশে বিলাওয়াল বলেন, তাদের উদ্দেশে আমার একটি বার্তা রয়েছে। কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। তাদের স্বপ্ন ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। গণতন্ত্র সর্বোৎকৃষ্ট প্রতিশোধ।
শনিবার রাতে অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের সাত দশকের কোনো প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে না পারার ইতিহাসের অংশ হলেন ইমরান খান।
পার্লামেন্টে জাতীয় পরিষদে ১৭৪ জন সদস্য তার বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছে জিও নিউজ। ভোট শেষে ফল ঘোষণা করেন নতুন স্পিকারের দায়িত্ব নেওয়া সরদার আয়াজ সাদিক।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মেনে দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সারের সভাপতিত্বে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অধিবেশন শুরু হয়। দিনভর চলে নাটকীয়তা। কয়েক দফায় অধিবেশন স্থগিত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারবেন না জানিয়ে রাতে পদত্যাগ করেন পাকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সার। পরে দায়িত্ব নেন আয়াজ সাদিক। এরপর ভোট অনুষ্ঠিত হয়।