নীলফামারীর ডোমারে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় এক কর্মীর উদ্দেশ্যে জুতা ছুড়ে মেরেছেন ডোমার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়াম্যান তোফায়েল আহমেদ। বুধবার (৩০ মার্চ) এ ঘটনার একটি ২০ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ডোমার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়াম্যান তোফায়েল আহমেদ আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে মঞ্চের পাশ থেকে এক সর্মথক বলে উঠে, সুমির বাপ আসছে, সুুমি নির্বাচন করবে দেখিয়া। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে কথা বলা বন্ধ করে লাথি মারতে গিয়ে জুতা ছুড়ে মারেন সেই সমর্থকের দিকে। তবু সেই সর্মথক বলতে থাকেন, সুমির বাপ আসছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডোমার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পাট গোডাউন মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডোমার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়াম্যান তোফায়েল আহমেদ। একই দিনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন, প্যারেড ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে রাজাকারের সন্তান আখ্যা দিয়ে অনুষ্ঠান বর্জন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার সময় সেই প্রসঙ্গে কথা বলার সময় সেই কর্মীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের পায়ের জুতা ছুড়ে মারেন উপজেলা চেয়াম্যান তোফায়েল আহমেদ। তবে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও সেই কর্মীকে পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে চিলাহাটি নিজ ভোগডাবুরির বাসিন্দা বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সরকার ফারহানা সুমির বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানীকে সুমির বাপ বলে সম্বোধন করা হয়। সরকার ফারহানা সুমি নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) সংসদীয় আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী। মহান স্বাধীনতা দিবসের দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী, সাবেক কমান্ডার নূর নবী ও সাবেক পৌর কমান্ডার ইলিয়াছ হোসেনের নেতৃত্বে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা অনুষ্ঠান বর্জন করে মাঠ ত্যাগ করে চলে যান। এরপরই রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে কর্মী-সর্মথকের উদ্দেশ্যে জুতা ছুড়ে মারেন উপজেলা চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়। এরপর তোলপাড় শুরু হয় ডোমার উপজেলাজুড়ে।
সেই পোস্টে জুয়েল সরকার নামে একজন মন্তব্য করেন, এমন নেতা বাংলাদেশে খুবই বিরল। উনি মানুষকে দিতে দিতে আজ উপজেলা চেয়ারম্যান, উনি নিজের জন্য কিছু রাখেন না। সব উজাড় করে দেন, তারই উদাহরণ এটা। নিজ দলের কর্মীকে পায়ের জুতা দিচ্ছেন! ডোমার-ডিমলাবাসী আওয়াজ তুলুন, আগামীতে সংসদে দেখতে চাই এমপি হিসেবে। তাহলে সর্বস্তরের জনগণ জুতাই পাবে, এর চেয়ে আর কী আশা করে জনগণ জ্ঞানহীন নেতার কাছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওর বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা চেয়াম্যান তোফায়েল আহমেদ বলেন, এই ভিডিওয়ের বিষয়ে কিছুু জানি না। এটা বানোয়াট, ভুয়া।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় সরকার ফারহানা সুমির সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি ভিডিওটি দেখেছি। তবে কেন তিনি জুতা ছুড়ে মারলেন তা জানি না। যেহেতু ভিডিওটির পুরো অংশ আমি দেখিনি বা পাওয়া যায়নি, তাই এটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। এটা আমার কাছে অতটা গুরুত্বপূর্ণ না।