ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর প্রথম দিনেই চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দখল করে নিয়েছিল রাশিয়া। আর এবার ঐতিহাসিক এই পরমাণু কেন্দ্রটির একটি গবেষণাগার ‘লুট ও ধ্বংস’ করার অভিযোগ উঠেছে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বুধবার (২৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ইউক্রেনের স্টেট এজেন্সি ফর এক্সক্লুশন জোন ম্যানেজমেন্ট জানিয়েছে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী তাদের সেন্ট্রাল অ্যানালাইটিক্যাল ল্যাবরেটরিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এই ল্যাবরেটরিটি বহু তেজস্ক্রিয় বর্জ্য প্রক্রিয়া করে থাকে।
রাষ্ট্রীয় এই সংস্থাটি ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের এই পরীক্ষাগারে ‘অত্যন্ত সক্রিয় নমুনা এবং রেডিওনুক্লাইডের নমুনা রয়েছে, যা আজ শত্রুর অধীনে রয়েছে’।
সংস্থাটির দাবি, প্রায় ৬০ লাখ ইউরো খরচ করে স্থাপন করা এই গবেষণাগারে ‘মূল্যবান বিশ্লেষণাত্মক সরঞ্জাম’ রয়েছে যা ইউরোপের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
সামরিক অভিযান শুরুর প্রথম দিনেই চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দখল করে নিয়েছিল রাশিয়া। দখলের পর পরমাণু ক্রেন্দ্রের ভেতরেই কর্মীদের আটকে রেখেছিল রুশ সেনারা। কয়েক সপ্তাহ পরে অবশ্য তাদের কয়েকজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৯৮৬ সালেল ২৬ এপ্রিল ভয়াবহ পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দিনটি ‘চেরনোবিলের বিপর্যয়’ হিসেবে পরিচিত।
সোভিয়েতের পতনের পর চেরনোবিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বর্তমান ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই পারমাণবিক দুর্ঘটনাকে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও বিপর্যয় হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে।