রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বিশ্বব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসবে বলে মনে করে মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত।
মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন আমিরাতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমানে দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের কূটনৈতিক উপদেষ্টা আনওয়ার গারগাশ।
মার্কিন সাংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে গারগাশ বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাব হবে দীর্ঘমেয়াদী ও গভীর। বিশ্বব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে এই বিশ্ব।’
‘কিন্তু আমি মনে করি, এই অবস্থা থেকে উত্তরণে একটি রাজনৈতিক সমাধান এখন সত্যিই প্রয়োজনীয়। এবং যত দ্রুত উভয়পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে, ততই শান্তিপূর্ণ আলোচনার ভিত্তিতে উভয় দেশের মধ্যকার উত্তেজনা প্রশমনের ব্যাপারটি গতি পাবে।’
‘দুই দেশের শান্তি সংলাপ যেন সফল হয়, সেজন্য অবশ্যই আমাদের তৎপর হতে হবে, কারণ যতই দিন গড়াচ্ছে, সংঘাতের তীব্রতা বাড়ছে।’
তবে তিনি একবারের জন্যও রাশিয়াকে দোষারোপ করে কোনো কথা বলেননি।
দুবাইয়ে এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতিনিধিদের সম্মেলন ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিট চলছে। আমিরাত সরকারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সেই সম্মেলনে বক্তব্য দেন গারগাশ। সেখানে তিনি বলেন, ‘বিশ্বর উপরিকাঠামোতে এক প্রকার পরিবর্তন ঘটছে এবং মধ্যপ্রাচ্য সেই পরিবর্তন দেখছে।’
‘কিন্তু কেবল দর্শক হয়ে বসে থাকলেই হবে না…অবশ্যই আমাদের তৎপর হতে হবে এবং রাজনৈতিক নয়—এমন ইস্যুগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।’
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু মূলত পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে। ২০০৮ সালে ইউক্রেনে ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা শুরু হয়।
ন্যাটো ইউক্রেনেকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও সম্প্রতি ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বাড়ে তিক্ততা। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহার করার জন্য ইউক্রেনকে নানাভাবে আহ্বান ও চাপ দিয়েছে রাশিয়া, কিন্তু ইউক্রেন তাতে কর্ণপাত করেনি।
অবশেষে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তার দু’দিন পর, ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরু করতে রুশ সেনাদের নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
মঙ্গলবার ৩৩ তম দিনে পৌঁছেছে রুশ সামরিক বাহিনীর অভিযান, গত ২৬ মার্চ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দেশটির সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ’স মেইন অপারেশনস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রধান সের্গেই রুডস্কয় এক সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে বলেন, ইউক্রেনে চলমান রুশ অভিযানের মূল লক্ষ্য দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে (ডনবাস অঞ্চল) স্বাধীন করা এবং ইতোমধ্যে অভিযানের প্রাথমিক পর্যায় শেষ করেছে রুশ বাহিনী।