ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধে রাশিয়াকে অর্থপূর্ণ শান্তি সংলাপ শুরুর তাগিদ দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শুক্রবার মধ্যরাতের পর এক ভিডিওবার্তায় এ আহ্বান জানান তিনি।
ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি চাই সবাই আমার কথা গুরুত্ব সহকারে শুনুক, বিশেষ করে মস্কো। এখন সময় এসেছে একটি অর্থপূর্ণ বৈঠকের, সংলাপের। এখন সময় এসেছে আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও ইউক্রেনের জন্য ন্যায়বিচারের।’
‘রাশিয়াকে অবশ্যই উদ্যোগী হতে হবে এ ব্যাপারে। তা না হলে এমন ক্ষতির মুখে পড়বে দেশটি, যা কাটিয়ে উঠতে কয়েক প্রজন্ম ধরে চেষ্টা করতে হবে।’
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সাল থেকে দ্বন্দ্ব চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। ওই বছরই ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিল ইউক্রেন। সম্প্রতি ন্যাটো দেশটিকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী সদস্যপদ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বাড়ে এই দ্বন্দ্ব।
ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনকে চাপে রাখতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।
কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।
অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’ দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এদিকে, ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র কূটনৈতিক পন্থায় দুই দেশের মধ্যকার সংকট সমাধানের আহ্বান জানাতে তাকে। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে গত ২ মার্চ বেলারুশের গোমেল শহরে আলোচনা শুরু হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে। ইতোমধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে উভয় পক্ষের মধ্যে, কিন্তু পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি।
কিয়েভ অবশ্য এর আগেও রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পর্যায়ের বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছিল, কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল— গোমেলে যতদিন বৈঠক চলছে, ততদিন প্রেসিডেন্ট পর্যায়ে সংলাপের সম্ভাবনা নেই।
শুক্রবারের ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, ইউক্রেনের সংঘাতপূর্ণ শহরগুলোতে মানবিক ত্রাণ সামগ্রির সরবরাহ আটকে রেখেছে রুশ সেনারা। তিনি বলেন, ‘এটা তাদের ইচ্ছাকৃত কৌশল….এটি একটি যুদ্ধাপরাধ এবং অবশ্যই এজন্য তাদের জবাবদিহিতা করতে হবে।’
সূত্র: রয়টার্স