রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘‘ইউক্রেন সংকটের ‘কূটনৈতিক সমাধান’ খুঁজতে মস্কো প্রস্তুত। তবে দেশের নিরাপত্তা স্বার্থ নিয়ে কোনও ধরনের আপস করা হবে না।’’
বুধবার রাশিয়ার বার্ষিক ‘ডিফেন্ডার অব দ্য ফাদারল্যান্ড ডে’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, রাশিয়া সবসময় কূটনীতির জন্য উন্মুক্ত। কিন্তু সবার আগে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ। তার ভাষায় বর্তমান ‘কঠিন আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির’ মুখে রাশিয়ার সামরিক শক্তি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
তবে ইউক্রেন ঘিরে বর্তমানে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটি তিনি ভাষণে সরাসরি উল্লেখ করেননি। এর আগে, মঙ্গলবার ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দু’টি অঞ্চল দনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে স্বাধীন ঘোষণা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তার এই ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ ইউরোপ ও অন্যান্য অঞ্চলের কয়েকটি দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ভিডিও বার্তায় পুতিন বলেন, ‘আমাদের দেশ সর্বদা সরাসরি ও সৎ সংলাপের জন্য উন্মুক্ত এবং সবচেয়ে জটিল সব সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান খুঁজতে প্রস্তুত।’
‘তবে আমি আবারও বলতে চাই যে, রাশিয়ার স্বার্থ এবং জনগণের নিরাপত্তা একেবারে শর্তহীন। এ নিয়ে কোনও আপস করা হবে না। আমাদের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীকে শক্তিশালী ও আধুনিকায়ন করার কাজ অব্যাহত থাকবে।’
দেশের মানুষকে অভিনন্দন এবং রাশিয়ার সেনাবাহিনীর যুদ্ধের প্রস্তুতির প্রশংসা করে রুশ এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি সামরিক বাহিনীর ‘পেশাদারিত্ব’ সম্পর্কে নিশ্চিত ছিলেন যে, তারা দেশের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে দাঁড়িয়ে যাবে।
পুরোমাত্রার আগ্রাসন চালানোর প্রস্তুতির অংশ হিসাবে ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়া দেড় লাখের বেশি সৈন্য সমাবেশ করেছে বলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের। তবে রাশিয়া বারবার এ ধরনের আগ্রাসনের পরিকল্পনা অস্বীকার করে বলেছে, বিচ্ছিন্ন দুই অঞ্চলের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব রয়েছে তাদের।
ইউক্রেন থেকে কূটনীতিকদের সরাচ্ছে রাশিয়া
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ও জীবন রক্ষার জন্য ইউক্রেনে থাকা রুশ মিশনগুলো থেকে কর্মীদের ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই এটি বাস্তবায়ন করা হবে।’
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, ইউক্রেনে অবস্থানরত রুশ কূটনীতিকরা হুমকি পাচ্ছেন এবং রুশ দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতেও ‘বারবার হামলার ঘটনা’ ঘটছে। ইউক্রেন গভীর বিশৃঙ্খলার মধ্যে নিমজ্জিত হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।