মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামের বৃদ্ধ মুসা করিম (৮০)।বিচার পেতে বিষভরা বোতল হাতে ছেলে ও নাতিকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। সঠিক বিচার ও বাড়িতে বসবাসের ব্যবস্থা না হলে তিনি সন্তান ও নাতিকে নিয়ে বিষপান করে আত্মহত্যা করতে জেলা প্রশাসকের কাছে অনুমতি চান।
গত মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বিষের বোতল হাতে লিখিত আবেদন নিয়ে আসেন বৃদ্ধ মুসা করিম (৮০)।
মুসা করিম জানান, গ্রামের মানুষের কাছে বিচার দিলে কেউ তাকে সহায়তা করে না।বিষের বোতল কেড়ে নিয়ে তাৎক্ষণিক বৃদ্ধের জমিতে বসবাসের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে।
মুসা করিম লিখিত আবেদনে বলেছেন– তার দুই সন্তান। প্রথম সন্তান লালচাঁদ ও ছোট সন্তান আমীর আলী। লালচাঁদের দুই স্ত্রী। মুসা করিম চলাচলে অক্ষম হওয়ার কারণে বসবাসের ১২ কাঠ জমি দুই সন্তানের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন।বড় ছেলেকে দেওয়া ছয় কাঠ জমি তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী আসমা খাতুন ও তার দুই ছেলে রিপন হোসেন (২৯) ও ফারুখ হোসেন (২৭) তার সন্তানের সঙ্গে রেজিস্ট্রি করে নেন।
লালচাঁদের দ্বিতীয় স্ত্রীর আকাশ নামে ১১ বছরের একটি সন্তান। সেই সন্তানকে বাড়ির চার কাঠা জমি মুসা করিম সম্প্রতি রেজিস্ট্রি করে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লালচাঁদের প্রথম স্ত্রী ও সন্তানেরা লালচাঁদ ও বৃদ্ধ মুসা করিম ও আকাশকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
এখন তারা দিনের বেলা এখানে ওখানে সময় কাটালেও রাত নিবারণ করছেন বড় কষ্টে। এ কারণেই ছেলে ও নাতিকে নিয়ে বিচার প্রার্থী হয়েছেন।
বাড়িতে বসবাসের ব্যবস্থা না হলে তিনি সন্তান ও নাতিকে নিয়ে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবেন বলে দাবি করেন।
মুসা করিম আরও জানান, গ্রামের মানুষের কাছে বিচার দিলে কেউ তাকে সহায়তা করে না।
কার্যালয়ের সামনে এমন অবস্থানের খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান কার্যালয় থেকে বেরিয়ে অসেন।
বৃদ্ধের হাত থেকে বিষের বোতল কেড়ে নিয়ে উপস্থিত সামাজিক সংগঠন ও সচেতন মানুষ দাবিদারদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের প্রথম কাজ তার হাত থেকে বিষের বোতল উদ্ধার করা। মানুষ বিকারগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আমাদের দায়িত্ব তাকে সেই পরিস্থিতি থেকে নিবৃত্ত করা। কিন্তু আপনারা তার পরিস্থিতি উপভোগ করছেন। এটি এক ধরনের তাকে উৎসাহ দেওয়া।
জেলা প্রশাসক বৃদ্ধ মুসা করিমকে আশ্বস্ত করেন সুব্যবস্থা করার। তিনি মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।