যুক্তরাজ্য বিগত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশের ভালো-খারাপ সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে এবং আগামী ৫০ বছরেও দেশটি বিশ্বস্ত বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ ডেভেলপমেন্ট মিনিস্টার লর্ড তারিক আহমেদ।
বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার রাতে এক ভার্চয়াল অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন লর্ড তারিক।
ব্রিটিশ ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ মন্ত্রী বলেন, আমরা সামনের দিকে যতি তাকাই বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্য বাণিজ্য, জলবায়ু, প্রতিরক্ষা এবং কমনওয়েলথসহ আরও অনেক বিষয়ে অগ্রাধিকারের উপর ভিত্তি করে একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে আনুষ্ঠানিক বৈঠক এবং পরে যুক্তরাজ্য ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি স্বীকৃতি ছিল শীতল যুদ্ধের উচ্চতার সময় একটি বড় ভূ-রাজনৈতিক উন্নয়ন। যা অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে উত্সাহিত করেছিল।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ এশিয়ার সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। এ অর্জনে যুক্তরাজ্য অবিচলভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমের সভাপতিত্বে হাইব্রিড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের চেয়ার এবং বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত রুশনারা আলী, কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট লর্ড করণ বিলিমোরিয়া। কনজারভেটিভ ফ্রেন্ড অফ ইন্ডিয়ার পৃষ্ঠপোষক এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের ভাইস-চেয়ার লর্ড রামি রেঞ্জার, বাংলাদেশে প্রাক্তন ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডব্লিউ গিবসন, ইউকে এফসিডিওর ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর জুডিথ হারবার্টসন, গ্লোবাল নেটওয়ার্কের পরিচালক।
এছাড়াও ব্রিটিশ কাউন্সিল চার্লি ওয়াকার, ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (আইআইএসএস) দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র ফেলো রাহুল রায় চৌধুরী, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ওভারসিজ ফ্রিডম মুভমেন্টের সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তি সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।
হাইকমিশনার মুনা তাসনিম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈদেশিক নীতি এবং ভবিষ্যৎ জলবায়ু এবং টেকসই উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষার একটি বিশেষ স্থান যুক্তরাজ্য।
গত বছরের নভেম্বরে শেখ হাসিনা এবং বরিস জনসনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে দুই নেতার ভাগ করা দৃষ্টিভঙ্গি এবং অগ্রাধিকারগুলো উপলব্ধি করতে হাইকমিশন যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে। আগামী দশকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা এবং প্রবাসীদের সম্পৃক্ততা গুরত্বপূর্ণ ইস্যু।
রুশনারা আলী তার বক্তব্যে বলেন, আমার বাবা এবং তার প্রজন্ম তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিল এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকারের সমর্থন জোগাড় করতে আত্মত্যাগ করেছিল। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের নৃশংসতার শিকার পরিবারগুলো এখনো ভুগছে।
তিনি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।