সম্প্রীতি রক্ষায় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে তরুণদের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আর্টিকেল নাইনটিন। বিভেদ, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এবং অপতথ্যের প্রভাব কমিয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি, বহুত্ববাদ, অন্তর্ভুক্তি এবং সহনশীলতা নিশ্চিত করতে সংলাপের আয়োজন করে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংলাপে আলোচকরা বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাংলাদেশের মূলভিত্তির মধ্যে নিহিত। শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহারের কারণে এ সম্প্রীতি যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয় সেটা নিশ্চিত করতে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের বেশিরভাগই বয়সে তরুণ। এজন্য অনলাইনে অপতথ্য, ফেক নিউজ ও গুজব চিহ্নিতকরণ ও প্রতিরোধের সক্ষমতাও তরুণদের অর্জন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের উত্তরবঙ্গ প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হাসিবুর রহমান বিলু এবং আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি সাবিত্রী হেমব্রম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট সাবরীনা মমতাজ ও প্রোগ্রাম অফিসার আনোয়ার রোজেন।
আলোচনায় কাজল দেবনাথ বলেন, একটি ক্ষুদ্র স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সবসময় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদের দেয়াল তৈরি করতে সক্রিয় থাকে। বাংলাদেশে এরাই আসল সংখ্যালঘু। সোশ্যাল মিডিয়ায় এদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে অনেক তরুণ নিজের অজান্তে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় উসকানি ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ গোষ্ঠীকে প্রতিহত করতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে তরুণদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হাসিবুর রহমান বিলু বলেন, ধর্মকে সামনে রেখে খুব সহজেই অরাজকতা সৃষ্টি করা যায়। তাই ফেসবুকে চাঞ্চল্যকর যেকোনো কিছুতে লাইক, শেয়ার ও কমেন্ট করার আগে আমাদের সবাইকে সতর্ক হতে হবে। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিভিন্ন ঘটনায় ফেসবুকেরও দায় আছে। ব্যবসার পাশাপাশি সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষার দায়িত্বও ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।
বাংলাদেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠী ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার পাশাপাশি সামাজিক বৈষম্যেরও শিকার হয় বলে মনে করেন সাবিত্রী হেমব্রম। তরুণ এ সমাজকর্মী বলেন, বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য স্বীকার করা হলেও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়। প্রান্তিকতা, নিজস্ব ভাষা ও দৈহিক গড়নসহ নানা কারণে আদিবাসীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সামাজিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়। সামাজিক এ বৈষম্য প্রতিরোধে সব ধর্মের ও গোষ্ঠীর তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে।