সিএনএম প্রতিনিধিঃ
ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে চাঁদার দাবিতে যাত্রীদের সাথে অসৌজনমূলক আচরণ ও মারধর করেছে সংঘবদ্ধ হিজড়ারা।সিলেট রেলপথে ট্রেনে হিজড়াদের দৌরাত্ম চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। যাত্রীরা ট্রেনে থাকা রেল স্টাফদের সহায়তায় হিজড়াদের সিলেট রেলওয়ে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে সিলেট-আখাউড়া রেলপথের ফেঞ্চুগঞ্জ ইলাশপুর এলাকায় চলতি ট্রেনে এ ঘটনাটি ঘটে।
হিজড়াদের মারধরে রাকিব আহমদ (২০) নামে এক ট্রেন যাত্রী আহত হোন।
ট্রেন যাত্রী রবিউল ইসলাম, সোহান আহমদ, ট্রেনে থাকা রেল পুলিশ কন্সেটবল আল আমিনসহ একাধিক যাত্রী জানান, কুলাউড়া থেকে ট্রেনে চারজন হিজড়া ওঠে টাকা দাবি করছেন। ট্রেনের ‘চ’ বগিতে থাকা রাকিব আহমদ নামে এক যাত্রীর কাছে চাঁদা চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে ওই চার হিজড়া একত্র হয়ে রাকিব ও তার সাথে থাকা মা এবং বোনের সাথে বিবস্ত্র হয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করেন। রাকিব প্রতিবাদ করতে গেলে হিজড়ারা তার ওপর চড়াও হয় এবং মারধর করতে থাকেন। এসময় ট্রেনের আরেক যাত্রী তাদেরকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে উনার উপর চড়াও হয় হিজড়ারা।
তারা আরও জানান, হিজড়াদের এমন কাণ্ড দেখে ট্রেনে থাকা যাত্রীরা একত্রিত হয়ে উল্টো চড়াও হোন। এ সময় হিজড়ারা নিজেরা নিজেদের কাছে থাকা ধারালো বস্তু দিয়ে নিজেদের রক্তাক্ত করতে থাকেন। ট্রেনের স্টাফ ও রেল পুলিশ হিজড়াদের উদ্ধার করার চেষ্টাকালে একজন হিজড়া তার গলায় পরা চেইনে লাগানো একটি ছোট্ট পাত্রে থাকা চেতনানাশক কোন ঔষধ মুখে দিয়ে গিলে ফেলেন। পরে চলন্ত ট্রেনের দরজা দিয়ে লাফ দিয়ে পড়ে যান। বাকি তিনজনকে ট্রেন যাত্রী ও স্টাফরা আটক করে সিলেট রেলওয়ে থানার পুলিশের হেফাজতে দিয়ে দেন।
যাত্রীরা জানান, গত কয়েক ৫ থেকে ৬ বছর ধরে এ রেলপথের ট্রেনে হিজড়াদের দৌরাত্ম চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। মান সম্মানের ভয়ে যাত্রীরা কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। কেউ প্রতিবাদ করলে হিজড়ারা বিবস্ত্র হয়ে উল্টো অসৌজন্যমূলক আচরণ ও হেনস্তা করেন। রেল পুলিশ তাদেরকে ভয়ে কিছু বলে না।
আহত রাকিব আহমদ বলেন, ‘ভানুগাছ স্টেশন থেকে আমার মা ও বোনকে নিয়ে পারাবত ট্রেনে সিলেট যাচ্ছিলাম। হঠাৎ চারজন হিজড়া এসে আমার কাছে টাকা দাবি করেন। টাকা না দিতে বলায় ওরা বিবস্ত্র হয়ে আমার মা ও বোনের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করে। তখন আমি বাধা দিলে হিজড়ারা আমার ওপর হামলা করে। এতে আমার নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। পরে যাত্রীরা এসে আমাদের হিজড়াদের হাত থেকে রক্ষা করেন।
সিলেট রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুছ সাত্তার বলেন, ‘ট্রেনে রেল যাত্রীকে মারধরের ঘটনায় ট্রেনের স্টাফ ও যাত্রীরা তিনজন হিজড়াকে পুলিশের হেফাজতে এনে দিয়েছে। হিজড়াদের হামলার শিকার রাকিব আহমদ অভিযোগ দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আটক হিজড়ারা নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানায়। এজন্য তাৎক্ষণিক নাম জানা যায়নি।’