এস.ইসলামঃ
রাজধানীতে খালি হাতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই। মেশানো হচ্ছে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রং। চিকিৎসকরা বলছেন, নিম্নমানের পামঅয়েলে ভাজা অস্বাস্থ্যকর এসব সেমাই খেলে ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগও হতে পারে।
ব্যস্ততায় দম ফেলার সময় নেই সেমাই কারিগরদের। দিনরাত এককরে চলছে উৎপাদনের কাজ। তবে এ পরিশ্রমের সঙ্গে মালিক পক্ষের লাভের পাল্লাটা ঠিক থাকলেও ঠিক নেই পণ্যের মান। ঈদের সময় সেমাইয়ের চাহিদা এতটাই বাড়ে যে, কোনও নিয়মনীতির বালাই ছাড়াই অলিগলিতে গড়ে ওঠে অসংখ্য সেমাই কারখানা।
রাজধানীর দয়াগঞ্জবাজার, গেণ্ডারিয়া, শ্যামবাজার এলাকার বেশ কয়েকটি কারখানায় দেখা যায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হ্যান্ডগ্লাভস ছাড়াই খালি হাতে কাজ করছেন শ্রমিকরা।
খালি হাতে কাজের বিষয়ে এক কর্মচারী বলেন, খালি হাত দিয়ে কাজ করলে যে ফিনিশিং আসবে গ্লাভস দিয়ে কাজ করলে তা সম্ভব না।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’র জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ বলেন, কোনও খাদ্য প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে প্রস্তুত প্রণালী অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত হতে হবে।
এতেই শেষ নয়, সেমাই নজরকাড়া করে তুলতে মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকর রং আর নিম্নমানের ডালডা। গায়ের ঘাম, কাপড়ের ময়লা আর দুর্গন্ধ- সব মিলেমিশে একাকার। পোড়া পামঅয়েল শেষ কবে পরিবর্তন করা হয়েছে জানেন না এখানকার শ্রমিকরাও।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ডা. রাজীব কুমার সাহা বলেন, প্রথমেই খাদ্যনালীর সমস্যা, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, পাকস্থলীর সমস্যা, কিডনির সমস্যা হতে পারে। যে রং মেশানো হয় তা সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এখান থেকে ত্বকের ক্যানসার, পাকস্থলীর ক্যানসারের ভয়াবহ কিছু হতে পারে।
সেমাই তৈরিতে এমন অনিয়ম নতুন কিছু নয়। ঈদ গিয়ে ঈদ আসে, তোড়জোড় বাড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের; তারপরও সবসময় উপেক্ষিত থেকেই যাচ্ছে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার মতো নাগরিক অধিকার।