সিএনএমঃ
রাজধানীর মহাখালী থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিনজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।
গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ মামুন হোসেন, আবু বক্কর ও হাসিবুল ইসলাম। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে ১টি ল্যাপটপ ও ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার (২ জুলাই ২০২৪) মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেফতার করে সিটিটিসির কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।
সিটিটিসি সূত্র জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা স্বীকার করেছে তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃত মোঃ মামুন হোসেন জানায়, সে অনলাইনে মুফতি জসিমউদ্দিন রহমানী ও তামিম আল আদনানি’র বক্তব্য শুনে উগ্রবাদের দিকে আকৃষ্ট হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে বিভিন্ন আইডির সাথে যুক্ত হয়ে “আনসার আল ইসলাম” সংগঠনের হয়ে কাজ শুরু করে। সংগঠনের সদস্য নাজমুল হাসান ওরফে ওসমান ও আবু কায়সার ওরফে রনির সাথে মামুন এর অনলাইনে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। রনি মামুনকে জানায় “পটাশিয়াম নাইট্রেট” দিয়ে বিস্ফোরক বা বোমা বানানো যায়। সেই সাথে আলীবাবা ওয়েব সাইট থেকে অর্ডার করার জন্যও মামুনকে নির্দেশনা প্রদান করে। নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে একত্রিত হলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে এবং নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়। এ সংক্রান্তে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে ২০১৯ সালে গেন্ডারিয়া থানায় একটি মামলা রুজু হয়। এ ঘটনার সহযোগী নাহিদ ফেরদাউস, মালয়েশিয়ায় এবং জ্যাক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করায় তখন তাদেরকে চিহ্নিত কিংবা গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। সে ঘটনার পর মামুন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গতকাল অপর গ্রেফতারকৃত আবু বক্কর এর সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। মামুন আবু বক্করকে সংগঠনের নাহিদ ফেরদাউস এর বিষয়ে বলে এবং নাহিদের সাথে যোগাযোগের নাম্বার ও হোয়াটসএ্যাপ নাম্বার দেয়। আবু বক্কর কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে অনলাইনে নাহিদ ফেরদাউস এর সাথে যোগাযোগ করে। নাহিদ ফেরদাউস সংগঠনের জন্য বিদেশ থেকে আবু বক্কর এর কাছে নিয়মিত অর্থ পাঠায়। আবু বক্কর উক্ত অর্থ সংগঠনের কাজে ব্যবহার করে। নাহিদ ফেরদাউস সংগঠনের গুরুত্বপুর্ণ সদস্য জ্যাক এর সাথে আবু বক্করকে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং জ্যাক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছে বলে জানায়। জ্যাক আনসার আল ইসলাম সংগঠনে নিয়মিত অর্থায়ন করে বলেও জানায়।
সিটিটিসি সূত্র আরও জানায়, পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আবু বক্কর অপর গ্রেফতারকৃত হাসিবুল ইসলামকে আনসার আল ইসলামের দাওয়াত দেয় এবং নাহিদ ফেরদাউস ও জ্যাকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। হাসিবুল ইসলাম নাহিদ ফেরদাউস ও জ্যাকের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। জনশক্তি বিদেশে প্রেরণের আড়ালে আনসার আল ইসলাম সংগঠনের সদস্যদের বিদেশে প্রেরণের ব্যবস্থা করে এবং দেশে আনসার আল ইসলাম এর নেটওয়ার্ক স্থাপন করে। বিদেশে অবস্থানরত সংগঠনের সদস্যরা বাংলাদেশে নাশকতার পরিকল্পনা করে।
সূত্র আরও জানায়, গ্রেফতারকৃতরা তাদের পলাতক সহযোগীদের নিয়ে বাংলাদেশের অখন্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার নিমিত্তে সরকার ও রাষ্ট্রের জননিরাপত্তা বিঘ্ন ও ক্ষতিসাধনের ষড়যন্ত্র করে। তারা ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের পরিকল্পনা করার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে মিলিত হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা রুজু হয়েছে