মামলা না নেওয়ায় ডিএমপির কোতয়ালী থানা ওসির বিরুদ্ধে অভিযগ
বিশেষ প্রতিনিধি :
নির্যাতীতা এক নারী ডিএমপির কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে, মামলা না নিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে থানা হতে বের করে দিল ঐ ভিক্টিমকে। এরপর নিরুপায় হয়ে তিনি স্বরাষ্ট্র সচিব, আই.জি.পি, পুলিশ কমিশনার ও বিভিন্ন সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন ন্যায় বিচার পেতে। স্বরাষ্টমন্ত্রনালয়ে দায়ের করা অভিযোগে ঐ ভোক্তভুগী নারী যা উল্লেখ করেছে—
গত ০৬-১২-২০২৩ই তারিখ আমার প্রতিপক্ষ আনোয়ারগংরা আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে পরবর্তীতে চিকিৎসা শেষে গত ০৯-১২-২০২৩ইং তারিখ রাত ৮ঘটিকার দিকে ডিএমপির কোতয়ালী থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। থানা পুলিশ আমাকে রাত ১ ঘটিকা পর্যন্ত থানায় বসিয়ে রেখে নানা ধরনের কথা-বার্তা জিজ্ঞেস করে তালবাহানা পূর্বক রহস্যজনকভাবে পুলিশ মামলা নেয়নি।
একপর্যায়ে থানায় নবাগত যোগদানকারী অফিসার ইনচার্জ ও অন্যান্য ডিউটি অফিসারগণ আমাকে নানা ধরনের ভুল বুঝিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মামলা না করার পরামর্শ দিয়ে এবং বলে কোতয়ালী থানায় ওসি সাহেব আজকেই জয়েন করেছে এই মুহুর্তে যদি ধর্ষণের মামলা নেওয়া হয় তাহলে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে জবাব দিতে হবে এতে ওসি স্যারের সম্মানহানীকর ক্ষতি সাধন হওয়ার সম্ভবনা থাকায় আমার অভিযোগের বিষয় কোন রকম ব্যবস্থা না নিয়ে থানা থেকে রাত ১ঘটিকার দিকে নিরাপত্তাহীনভাবে আমাকে বের করে দেয়।
ঐ মুহুর্তে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি বলে যে আপা এই থানায় আপনার এ মামলা হবে না, কেননা থানার ওসি (তদন্ত) আপনার এজাহারে উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গের সাথে আগে থেকেই সু-সম্পর্ক রহিয়াছে। কারণ এজাহারে উল্লেখিত ব্যক্তি এই এলাকার চিহিত ক্রিমিনাল।
আমি আমার যাত্রাবাড়ী ভাড়াটিয়া বসত বাসায় যাওয়ার পথে দয়াগঞ্জ রেল লাইন এলাকায় রাস্তায় আমার রিক্সা গতিরোধ করে এজাহারে উল্লেখিত মোঃ শিপন হাওলাদার (২৮) সহ আরো কয়েকজন মিলে আমাকে নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দেয় এবং বলে কোতয়ালী থানায় যেয়ে কোন লাভ হবে না থানার ওসিকে গোপনে টাকা-পয়সা দিয়ে ম্যানেজ করা হয়ে গেছে, বাড়াবাড়ি করলে উল্টো তোর নামে মামলা দিবো, এ বলে হুমকি-ধামকি দিয়ে আমাকে ছেড়ে দেয়।
এরপর আমি পরদিন হাসপাতালে গিয়ে পুনরায় চিকিৎসা গ্রহণ করি এবং পরেরদিন ১০-১২-২০২৩ইং তারিখ সন্ধ্যা ৭ঘটিকার দিকে পুনরায় কোতয়ালী থানায় গিয়ে অফিসার ইনচার্জ এর সাথে দেখা করি এবং আমার অভিযোগপত্র খানা দিই, অভিযোগটি পড়ে ওসি বলে এ ঘটনার বিষয়ে কোন মামলা হবে না যার কারণ হচ্ছে আপনার ঘটনাটি একটি হোটেলে হয়েছে বাংলাদেশে এত জায়গা থাকতে হোটেলে মরতে গেছেন কেন? এ অভিযোগ নিয়ে থানায় যেন আর না দেখি। একপর্যায়ে থানার ডিউটি ডেলিভারি সার্ভির এর অফিস কক্ষের এক মহিলা পুলিশ সদস্য আমাকে বলে আপা আপনি শুধু শুধু এ অভিযোগ নিয়ে কয়েকদিন যাবত থানায় এসে ঘোরপাক খাচ্ছেন, আপনি যাদের নামে অভিযোগ করছেন তারা কোতয়ালী এলাকার ভয়ংকর ক্রিমিনাল।
তাছাড়া ওসি (তদন্ত) ও ওসি (অপারেশন) এর সাথে পূর্ব থেকে গোপন লেনদেনে সু-সম্পর্ক আছে। আর আমাদের থানায় বর্তমান ওসি নতুন এসে তার সাথেও আজকে উক্ত ক্রিমিনালরা দেখা করে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেছে। তাই এই থানায় আপনার এই অভিযোগের বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নিবে না পুলিশ। এছাড়া আপনি আজ আইজিপি মহোদয় বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন, যাহার ঝখ- ৮৯২, তারিখঃ ১০-১২-২০২৩ইং। আপনার ঘটনার বিষয়ে তাহা উক্ত দপ্তর হতে ওসি জেনে গেছে এজন্য আপনার উপরে কোতয়ালী থানার ৩জন ওসি ক্ষিপ্ত।
তখন আমি বলি, আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের কাছে লিখিত অভিযোগ করব, তখন ঐ মহিলা পুলিশ বলে কোতয়ালী থানার বর্তমান নবাগত ওসি স্যার পুলিশ কশিনার, আইজিপি’কে তার পকেটে রাখে। তার খুটির জোর অনেক উপরে, আইজিপি ও পুলিশ কমিশনার ওসি স্যারকে কি করবে?
সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগের বিষয়ে তুলে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং ভুক্তভোগী ঐ নারী বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই, অভিযুক্ত গডফাদার আনোয়ারের বন্ধু রুবেল আমার পরিবারের লাইফটা শেষ করে দিয়েছে। রুবেল প্রথমে আমাকে বিয়ে করেছে এরপর আমার স্বয়-সম্বল সবকিছু কেড়ে নিয়ে কৌশলে জোরপূর্বক আমার ছোট বোনকেও বিয়ে করেছে। আমার বাবার অর্থ-সম্পদ হাতিয়ে নিয়ে আমার বোন ও আমাকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে এখন বিভিন্ন সন্ত্রাসী দিয়ে নানাভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে। তবে রুবেল আমার দায়ের করা পূর্বের এক মামলায় বর্তমানে জেলহাতে আছে।
এ বিষয়ে কোতয়ালী থানা অফিসার ইনচার্জ, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ও ইন্সপেক্ট (অপারেশন)কে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
পর্ব—১