সারাদেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে খাবারের দাম বেড়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হোটেলগুলোতে। খাবারের মান বৃদ্ধিতে মনোযোগ না দিলেও খাবারে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ দাম বৃদ্ধি করেছে হোটেল মালিকরা। এদিকে আবাসিক হল খুলে দেওয়া হলেও চারদিন পরও ডাইনিং চালু হয়নি। যার কারণে বাধ্য হয়ে হোটেলে খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ফলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মানহীন উচ্চমূল্যের খাবার নিয়ে বিপাকে তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হোটেলগুলোতে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় সকল খাবারের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। মামা হোটেল, নবী মামা হোটেলে পূর্বের চেয়ে প্রতিটি খাবারের দামে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরটা ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা, ডিম ভাজি ১৫ টাকা থেকে ২৫ টাকা, মুরগি ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা, শিং মাছ ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া গরুর মাংস (হাফ) ৬০ টাকা থেকে ৮০-৯০ টাকা হয়েছে। খাবারের মানে কোন ধরনের পরিবর্তন না হলেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে খাবারের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে অপুষ্টিসহ ডায়রিয়াজনিত রোগে ভুগছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে হলের ডাইনিং বন্ধ থাকায় হোটেল মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে তারা। খাবার দাম নিয়ে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করলেও হোটেল মালিকদের দাবি, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির ফলে বেড়েছে খাবারের দাম। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হোটেলগুলোতে খাবারের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী জানান, দ্রব্যমূল্যের অজুহাতে সকল খাবারের দাম বেড়েছে হোটেলগুলোতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী মধ্যবিত্ত পরিবারের। প্রতিদিন উচ্চমূল্যে খাবার খেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। এছাড়া অনেক হোটেলে কিছু খাবারের দাম অযৌক্তিকভাবেও বাড়ানো হয়েছে। যার ফলে প্রয়োজনীয় খাবারগুলোই কিনে খাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হোটেল মালিকদের সাথে বসে দাম নির্ধারণ করে দিলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমবে জানান তারা।
এদিকে হলের ডাইনিং বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে হোটেলের উচ্চমূল্যের খাবার খেতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, হল খোলার চারদিনেও ডাইনিং চালুর বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। বাইরের হোটেলের চেয়ে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকে হলগুলোতে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা সাশ্রয়ীমূল্যে খাবার খেতে পারে। কিন্তু ডাইনিং চালু না হওয়ায় বাধ্য হয়ে হোটেলে খেতে হচ্ছে।
তবে হোটেল মালিকেরা বলছেন, চাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খাবারের দাম বৃদ্ধি করতে হয়েছে।
হলের ডাইনিং চালুর বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের হলের ডাইনিং যেহেতু শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে চালাতে হয়, সেজন্য তাদের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমি আজকেই ডাইনিং ম্যানেজারদের সাথে বসে ডাইনিং চালুর ব্যবস্থা করব।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, সারাবিশ্বে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চলছে। সেজন্য হয়তো হোটেলের খাবারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। তবে হলের ডাইনিং চালুর বিষয়ে হল প্রভোস্টদের সাথে কথা বলতে বলেন তিনি।