যাদের জীবন ছিল জন্মের পর থেকেই পাহাড়ের চূড়া থেকে পানি এনে জীবন যাপন করা। তারা এখন সুপেয় পানি পাচ্ছে হাতের নাগালে। এতে যেমন সময় অপচয় কমে গেছে, তেমনি কষ্ট লাগব হয়েছে অনেক বেশি।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা সদর ইউপির আলুটিলা পুনর্বাসন এলাকায় পাহাড়ের চূড়ায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ১৬০ পরিবারের মাঝে এই সুপেয় পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছে সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় মাটিরাঙ্গা সদর ইউপির পুনর্বাসন এলাকায় এই পানির প্রকল্প উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি ২০৩ পদাতিক ব্রিগেড ও রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম।
জানা যায়, সমুদ্রপৃষ্ঠে পাম্প বসিয়ে ৫০০ মিটার ওপরে পাইপের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে পানির সুব্যবস্থা করা হয়। এতে ১০ হাজার লিটারে পানির ট্যাংক দিয়ে পানি মজুত করার ব্যবস্থা হয়েছে। সেখান থেকে বাসিন্দারা পানি নিয়ে ব্যবহার করতে পারবে নিজের প্রয়োজনমতো।
পুনর্বাসন এলাকার কার্বারী সূর্যকিরণ ত্রিপুরা বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষ থেকে এখানে বসবাস। আমরা সব সময় বাড়ি থেকে হেঁটে পাহাড়ের চূড়া থেকে কষ্ট করে পানি এনে ব্যবহার করতে হতো। অনেক সময় পানি কম থাকে চূড়ায় তখন আরও কষ্ট বেড়ে যেত। এখন সেনাবাহিনী আমাদের এখানে যে পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছে, এতে আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। আমাদের এখন যেমন সময় বেঁচে গেছে, তার ছেয়ে বেশি উপকার হয়েছে আমাদের কষ্ট কমে গেছে।
মাটিরাঙ্গা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হেমেন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, এই পানির ব্যবস্থা করে দেওয়ায় আমার এলাকার মানুষের অনেক উপকার হয়েছে। আগে পাহাড়ের চূড়া থেকে পানি এনে ব্যবহার করালে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতো। এখন এই পানির সুব্যবস্থা হওয়ায় মানুষ এখন আর তেমন কোনো অসুস্থ হবে না। সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খাগড়াছড়ি রিজিয়ন সব সময় পাহাড়ের মানুষের পাশে আছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ এই প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখানকার মানুষ ৩৫ বছর ধরে পানির কষ্টে ছিল। আমরা তাদের এই দুঃখ-কষ্ট লাগবে এটি স্থাপন করেছি। আশা করি তারা এখন শান্তিপূর্ণভাবে এই পানি ব্যবহার করতে পারবে। তাদের সময় ও কষ্ট দুটোই বেঁচে যাবে।