ধর্মীয় সংবেদনশীল বিষয়গুলোতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে বন্ধুরাষ্ট্রগুলো যেন বুঝে-শুনে, সঠিক তথ্য-উপাত্ত নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে। এমনটাই পরামর্শ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ রাশাদ হোসাইনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ পরামর্শ দেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্যবশত রিলিজিয়াস সেনসিটিভিটি এ উপমহাদেশে মাঝে মাঝে অন্য রকম ডাইমেনশন নিয়ে ফেলে। এটাকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এটা যেন রাজনীতিবিদরা না করেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর যে কথা, আমরা কাউকে রিলিজিয়াস মাইনরিটি বলি না, বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে ট্রিট করি। তবে চ্যালেঞ্জগুলো যখন আসবে, তখন বন্ধুরাষ্ট্রগুলো যেন গ্রাউন্ড রিয়ালিটি বুঝে। সে হিসেবেই তারা যেন পদক্ষেপ নেন। আমি মার্কিন দূতের কাছে রামুর ঘটনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছি।
বাইডেনের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক দূত চারদিনের সফরে রোববার ঢাকায় আসেন। সফরের শেষ দিন তিনি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ধর্মীয় ইস্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নিয়ে ওনার সঙ্গে আলোচনা করেছি। কুমিল্লার ঘটনা নিয়ে আলাপ করেছি। ওই ঘটনায় তিনি সরকারের তড়িৎ পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা করেছি, ভাসানচর নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি বলেছি, একটা পর্যায়ে বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের উত্থান হয়েছিল, যেটা প্রধানমন্ত্রী নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। এটা ধারাবাহিকভাবে চলবে। আমি এটা বলেছি এটা করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে হয়। তখনই মাঝে মাঝে কিছু কনফিউশন চলে আসে বা ভুল বোঝাবুঝি হয়।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ধর্মীয় বিষয়ে সামনের দিনে যেন আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করি, তা নিয়ে আলোচনা করেছি। সামনের দিনে রিলিজিয়াস হারমনি বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে বলে সম্মত হয়েছে।
এ সময় বাইডেনের বিশেষ দূতের রোজা রেখে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের জন্য প্রশংসা করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি প্রধানমন্ত্রী সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। মানবিক বিষয়গুলোর কথা বলেছেন। আইসিজেতে যে মামলাটি পরিচালিত হচ্ছে, এতে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করবে বলে আশা করা যায়। এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে।
রোজায় ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলা অগ্রহণযোগ্য
রোজার মধ্যে ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, ইসরায়েলিরা ফিলিস্তিনের ওপর রমজানেও হামলা করছে। আমরা এটার প্রতিবাদ জানাই। এটা অগ্রহণযোগ্য।
সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইউরোপের মতো সভ্য দেশেও এ ধরনের চেষ্টা বা অপচেষ্টা হচ্ছে। ইউরোপ বলে একটা কাজ করে মাফ পেয়ে যাবে বা পশ্চিমা বিশ্ব বলে একটা কাজ করে মাফ পেয়ে যাবে এমনটা হতে পারে না ।