যৌতুকের জন্য আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার ঘটনার ছয় মাস পর স্বামী সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শনিবার (১৬ এপ্রিল) চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।
তিনি বলেন, ভোরে চট্টগ্রাম নগরীর বায়োজিদ বোস্তামি থানার চন্দন নগর এলাকা থেকে মো. সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিয়ের পর থেকে যৌতুকের টাকার জন্য মনি আক্তারকে শারীরিক নির্যাতন করতেন সুমন। ভিকটিম শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ও সংসার টেকানোর লক্ষ্যে সুমনকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা দেন। এর মধ্যে মনি আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা হন।
তিনি বলেন, এরপরও যৌতুকের টাকার জন্য প্রতিনিয়ত মনিকে চাপ দিতেন সুমন। গত বছরের ৩১ অক্টোবর মনির বাবার বাড়ি ভুজপুর আসেন সুমন। সঙ্গে মনিকে নিয়ে আসেন। এসেই যৌতুকের টাকা চান মনির পরিবারের কাছে। কিন্তু মনির দরিদ্র বাবা টাকা দিতে না পারায় আসামি সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে মনিকে নিয়ে চলে আসে। আসার পথেই মোটরসাইকেলে এ নিয়ে মনির সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়, গালিগালাজও করেন।
একপর্যায়ে ভুজপুর থানার কালিকুঞ্জ এলাকায় আসামি সুমন চলন্ত মোটরসাইকেলে বসা মনিকে থাপ্পড় দিয়ে মাটিতে ফেলে মারধর শুরু করেন। এরপর সুমন আঙুল দিয়ে মনির বাম চোখ নষ্ট করে ফেলেন ও দুই হাত-দুই পা ভেঙে ফেলেন। এছাড়া ইট দিয়ে মনির মাথায় আঘাত করেন ও মোটরসাইকেলের গরম সেলেঞ্জার পাইপের সঙ্গে মনির বুক চেপে ধরে পুড়ে ফেলেন। এরপর সুমন মনিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে রেখে পালিয়ে যান। ঘটনার ২৬ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৫ নভেম্বর আট মাসের গর্ভাবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন মনি।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় ভুজপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখে র্যাবের একটি দল আজ বায়োজিদ বোস্তামি থানার চন্দন নগর এলাকা থেকে মো. সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে ভুজপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।