পাকিস্তানের নব-নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই মঙ্গলবার সরকারি অফিসে সাপ্তাহিক দু’দিনের ছুটি বাতিল এবং অফিসের সময় পাল্টে দিয়েছেন। সঙ্কটে জর্জরিত দেশটির অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি।
সোমবার পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন শেহবাজ শরিফ। সরকারি কর্মীদের অফিসে পৌঁছানোর আগেই সকাল ৮টার দিকে নিজ কার্যালয়ে হাজির হন তিনি। বেশিরভাগ কর্মীই সাধারণত সকাল ১০টায় অফিসে পৌঁছান; আর সরকারি অফিসের এই সময়সূচি সদস্য ক্ষমতাচ্যুত পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আমলে ঠিক করা হয়েছিল।
পরে নতুন এই পাক প্রধানমন্ত্রী সরকারি অফিসে কর্মীদের হাজির হওয়ার সময় সকাল ১০টার পরিবর্তে ৮টা করেন। এছাড়া সরকারি অফিসে সাপ্তাহিক ছুটি কেবল রোববার থাকবে বলে ঘোষণা দেন তিনি, জানিয়েছে রেডিও পাকিস্তান।
অফিসের কর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে শেহবাজ শরিফ বলেন, আমরা গণমানুষের সেবা করার জন্য ক্ষমতায় এসেছি। এক মুহূর্তও নষ্ট করা যাবে না। সততা, স্বচ্ছতা, নিরলস সেবাদান এবং কঠোর পরিশ্রমই আমাদের পথনির্দেশক নীতি।
একই সঙ্গে তিনি সরকারি কর্মীদের পেনশন বৃদ্ধি এবং ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার রুপি করার ঘোষণা অবিলম্বে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
৯ এপ্রিল দিনভর নানা নাটকীয়তা এবং মধ্যরাতে সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের পদত্যাগের পর অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান ইমরান খান। দেশটির ৩৪২ সদস্যের সংসদের ১৭৪ জনই ইমরান খানের বিরুদ্ধে ভোট দেন। এতে ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি।
অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের সাত দশকের কোনো প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে না পারার ইতিহাসের অংশ হয়েছেন সাবেক এ ক্রিকেট তারকা। পাকিস্তানের আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে গত ৮ মার্চ অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। তবে এ প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল তা খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি।
সেদিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এ পরিস্থিতিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। টানা পাঁচ দিন শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট ৭ এপ্রিল অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ এবং জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেন এবং অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট আয়োজনের নির্দেশ দেন।