স্টাপ রির্পোটার -ঢাকা জেলার সাভারের বনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর মুগদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সহ ৯জনের বিরুদ্ধে ঢাকা আদালতে মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মানবপাচার মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ১০ইং এপ্রিল মর্জিনা (ছদ্ধনাম) নামের এক মহিলা বাদী হয়ে ঢাকা জেলার সাভার থানার বনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল ইসলাম (৫৫)
ঢাকা মহানগর মুগদা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জামাল উদ্দিন মীর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন ৮২/২ ইউনুস সুপার মার্কেটের নিউ পপুলার আবাসিক হোলেটের ভাড়াটিয়া মালিক, শহীদ ফারুক রোড এলাকার মোঃ জাভেল হোসেন পাপন (৪১) রাজধানীর উত্তর মানিকনগর এলাকার মোঃ মোখলেছ (৩৫) নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার কাবিলগঞ্জ গ্রামের মৃত-তোফাজ্জল মিয়ার ছেলে মোঃ আনিসুল বাসার রতন (৩২) বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ থানার সিন্নিরচর গ্রামের দলিল উদ্দিনের ছেলে মোঃ জসিম (৫০) রাজধানী যাত্রাবাড়ীর ৮২/এ, শহীদ ফারুক রোড এলাকার মোঃ কবির হোসেন ওরফে মিরাজ (৪৫) রাজধানীর ৪৬/বি/-১ উত্তর মানিকনগর এলাকার ভাড়াটিয়া মোঃ আলাউদ্দিন (৩০) মোসাঃ আনোয়ারা বেগম আঙ্গুরীর (৫০) এর বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে ৭/৮/১০/১৪ ধারায় একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেছেন
মামলাটি তদন্ত করার জন্য আদালত সি.আই.ডি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে বলে জানা গেছে। মামলার বাদী তার দায়ের করা মামলার আরজিতে উল্লেখ করেছেন মামলার ২,৩ ও ৬নং বিবাদীর সাথে বাদীর পরিচয় হয় এবং তাদের সহযোগীতায় মামলার ৮নং বিবাদী আঙ্গুরীর বাসার ঝি এর কাজ করান এবং তাদের পরস্পর যোগসাজসে বাদীনিকে জিম্মী করে রেখে মামলার বিবাদী মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোঃ জাভেল হোসেন পাপন, মোখলেছ, আনিসুল বাসার রতন, জসিম, মোঃ কবির ওরফে মিরাজ ও আলাউদ্দিন মামলার বাদীকে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করে এবং বিবাদী আঙ্গুরীর মামলার বাদিনীকে দীর্ঘদিন যাবত জিম্মী করে রেখে উল্লেখিত ধর্ষণকারীদের পরোক্ষ সহযোগীতায় বাদীকে আঙ্গুরী দীর্ঘদিন যাবত জোর করে পতিতার কাজ করিয়ে আসছিল। গত ২৯শে মার্চ দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টার মধ্যে মামলার বিবাদী মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোঃ মোখলেছ ও কবির ওরফে মিরাজ এবং তাদের সাথে অজ্ঞাতনামা ২/৩জন বাদিনীকে জোরপূর্বক রাজধানীর উত্তর মানিকগনগর এলাকার আনোয়ারা বেগম আঙ্গুরীর ভাড়াটিয়া বাসায় পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে ধর্ষিতা আঙ্গুরীর জিম্মীদশা থেকে গত ২৯শে মার্চ কৌশলে ধর্ষিতা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে ঢাকা মহানগর মুগদা থানায় হাজির হয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)কে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার আকুতি-মিনতি করিলে ওসি মামলা না নিয়ে রহস্যজনকভাবে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে রাখে এবং ধর্ষিতাকে নানা ধরনের ভয়-ভীতি দেখিয়ে থানা থেকে ধর্ষিতাকে বের করে দেয়। পরে ধর্ষিতা কোন উপায় না পেয়ে সে ঐদিন
ঢাকা মহানগর মুগদা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মনোতোষের কার্যালয়ে গিয়ে সে তার সাথে দেখা করে ধর্ষনের বিস্তারিত ঘটনা তাকে জানালে সে তাৎক্ষনিকভাবে ধর্ষিতাকে মুগদা থানার ওসির নিকট পাঠিয়ে দিলে ধর্ষিতা বাদী হয়ে ধর্ষণকারীদের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে ওসির নিকট একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন ধর্ষণ মামলা করার জন্য। কিন্তু মুগদা থানার ওসি ধর্ষণ মামলা না নিয়ে মুগদা থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক এনামুলকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দিলে এনামুল ধর্ষিতাকে সাথে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের টের পেয়ে ধর্ষণকারীরা ও ধর্ষনের সহযোগী আনোয়ারা বেগম আঙ্গুরী পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ অফিসার এনামুল ধর্ষিতাকে সাথে নিয়ে মুগদা থানায় আসলে মুগদা থানার ওসি মোঃ জামাল উদ্দিন মীর ধর্ষিতার দায়ের করা এজাহারটি রেখে দিয়ে ধর্ষিতার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ধর্ষিতাকে থানা থেকে বের করে দেন এবং পরেরদিন ৩০শে মার্চ ধর্ষিতাকে মুগদা থানায় যেতে বলেন। সে তার কথামতো পরেরদিন মুগদা থানায় গেলে মুগদা থানার পুলিশ তাকে থানায় ঢুকতে দেয়নি এবং ধর্ষিতা খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারেন থানার ওসি ধর্ষিতার ধর্ষনের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে এবং থানায় ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা না নেয়াতে ধর্ষণকারীরাও তাদের সহযোগীতারা ধর্ষিতাকে খুন করে তার লাশ গুম করে ফেলবে বলে মামলার আরজিতে উল্লেখ করেছেন বলে জানা গেছে। ধর্ষিতার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানা এলাকায় বলে জানা গেছে।
এদিকে মুগদা থানায় ধর্ষণ মামলা না নেয়াতে ধর্ষিতা বাদী হয়ে ঘটনার পর মুগদা থানার ওসি ও ধর্ষণকারী এবং ধর্ষণের সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব পুলিশের আই.জি.পি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার ও ঢাকা মহানগর মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বলে জানা গেছে। উক্ত ঘটনার ব্যাপারে প্রতিবেদক ঘটনা স্থলে সরজমিনে পরিদর্শনে গেলে ঘটনাস্থলের বাড়ির মালিক মোস্তাফিজুর রহমান প্রতিবেদককে জানায় তার বাড়ির নিচতলার ভাড়াটিয়া আঙ্গুরী ও তার সহযোগীরা মাদক ও নারী পতিতা ব্যবসা করিত বলে জানায় এবং এ ব্যাপারে সে বাদী হয়ে গত ১৩ই মার্চ মুগদা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছে বলে জানায়। এদিকে ধর্ষণকারীদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে ধর্ষণকারী জাভেল হোসেন পাপন, জসিমসহ অনেকের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ধর্ষণ, ছিনতাই ও নারী পাচার, আবাসিক হোটেলে পতিতা ব্যবসাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে উক্ত ঘটনাসহ বিবাদীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুরুত্বর অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে সংবাদ প্রকাশ করা হবে।
তারিখ : ১১/০৪/২০২২ইং