ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এলাকায় বেসামরিক হত্যাকাণ্ডের নতুন প্রমাণ এবং দেশটির অন্যত্র ক্রমাগত লড়াইয়ের সূচনা হওয়ার পর রাশিয়ার সাথে কোনো শান্তি চুক্তির আশা আছে কি না তা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। এই বিতর্কের মধ্যেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সম্ভাব্য বৈঠকের বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে বলে খবর দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ইউক্রেনের একজন শান্তি আলোচকের উদ্ধৃতি দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। অন্যদিকে রুশ বার্তাসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, পুতিন ও জেলনস্কির সাক্ষাতের সম্ভাব্য স্থান হতে পারে তুরস্ক।
রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশগ্রহণকারী ইউক্রেনের প্রধান প্রতিনিধি ডেভিড অ্যারাখামিয়া শনিবার (২ এপ্রিল) বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্ভাব্য বৈঠকের জন্য আলোচনা যথেষ্ট অগ্রসর হয়েছে।
গত শুক্রবার ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে প্রতিনিধিদলের মধ্যে আলোচনায় অগ্রগতির কথা জানিয়ে ইউক্রেনের প্রধান এই শান্তি আলোচক বলেছেন, ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়া ছাড়া সকল বিষয়ে ইউক্রেনের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে রাশিয়া।
অবশ্য ইউক্রেনের এই বক্তব্যের পর রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। রাশিয়ার প্রধান আলোচক ভ্লাদিমির মেডিনস্কি শুক্রবারের ওই আলোচনার পর বলেছিলেন, ক্রিমিয়া ও ডনবাস অঞ্চল নিয়ে রাশিয়ার অবস্থান পরিবর্তন হয়নি।
রাশিয়া বরাবরই জোর দিয়ে বলে আসছে যে, ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে ইউক্রেনকে। একইসঙ্গে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিকে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত ডনবাসের স্বাধীনতাকেও স্বীকৃতি দিতে হবে। মূলত রুশ-সমর্থিত বিদ্রোহীরা ডনবাস অঞ্চলের একটি বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
এদিকে রুশ সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে পার্সটুডে বলছে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান শুক্রবার পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, এসব টেলিফোনালাপে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সম্মত হয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।
তবে তুরস্কে সম্ভাব্য এই বৈঠক আয়োজনের কথা শোনা গেলেও দেশটির ঠিক কোন শহরে এ সাক্ষাৎ হবে এবং এর সম্ভাব্য তারিখ জানাতে পারেননি ডেভিড অ্যারাখামিয়া।
উল্লেখ্য, তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে গত কয়েকদিন ধরে শান্তি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদল। সেইসঙ্গে দুই পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিজ নিজ দেশে অবস্থান করে ভার্চুয়ালি আলোচনায় যুক্ত হচ্ছেন। শনিবার উভয়পক্ষ আলোচনাকে ‘কঠিন’ বলে মন্তব্য করেছে।