মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থেকে ১২ কেজি অবৈধ মাদক আইসসহ (ক্রিস্টালমেথ) ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। জব্দ হওয়া এই আইসের বাজার মূল্য ৫০ কোটি টাকার বেশি।
র্যাব জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত জব্দ হওয়া চালানগুলোর মধ্যে এটি সর্ববৃহৎ। গ্রেফতারদের কাছ থেকে অন্যান্য মাদকদ্রব্য ও বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রও জব্দ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) বেলা ১১টায় কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে গত বছরের ১৬ নভেম্বর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে ৫ কেজি আইসের চালান ও বিদেশি অস্ত্র-গুলিসহ টেকনাফের আইস সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা মো. হোছেন ওরফে খোকন ও সহযোগী মোহাম্মদ রফিককে গ্রেফতার করে র্যাব। জব্দ করা আইসের বাজার মূল্য ছিল প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে ২টি মোবাইল, ৩টি মিয়ানমারের সিমকার্ড এবং মাদক ব্যবসায় ব্যবহৃত ২০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
ওই সময় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে র্যাব জানিয়েছিল, মিয়ানমার থেকে নৌপথে আসছে আইস। এটি আঁচার, কাপড় ও চায়ের প্যাকেটে পাচার হচ্ছে। নিজস্ব পরিবহনে চট্টগ্রাম-ঢাকায় পৌঁছে যাচ্ছে আইসের চালান। পরে সেগুলো উত্তরা, গুলশান, বনানী, মোহাম্মদপুরের অভিজাত এলাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আকাশচুম্বী চাহিদা থাকায় আইসে ঝুঁকছে মাদক কারবারিরা। এক গ্রাম আইস বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২৫ হাজারে। জব্দ হলে টাকা নেয় না মিয়ানমারের মাদক ব্যবসায়ীরা।
আইস সেবনে ইয়াবার চেয়েও ক্ষতি বহুগুণ
র্যাব জানায়, বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত মাদক হলো আইস বা ক্রিস্টালমেথ। ক্রিস্টালমেথ বা আইসে ইয়াবার মূল উপাদান এমফিটামিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই মানবদেহে ইয়াবার চেয়েও অনেক বেশি ক্ষতি করে এই আইস। এটি সেবনের ফলে অনিদ্রা, অতি উত্তেজনা, স্মৃতিভ্রম, মস্তিষ্ক বিকৃতি, স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি ও লিভার জটিলতা এবং মানসিক অবসাদ ও বিষণ্ণতা তৈরি হয়। ফলে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এই মাদক প্রচলনের ফলে তরুণ-তরুণীদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং অস্বাভাবিক আচরণ করতে দেখা যায়। মাদকাসক্তরা নানা অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ছে।