জেন্ডার সমতা নিশ্চিতে নারী-পুরুষের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকা জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন আলোচকরা। তারা বলেছেন, নারীরা পারিবারিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা সত্ত্বেও তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না। জেন্ডার সমতা নিশ্চিতে গৃহস্থালি কাজের অর্থমূল্য পরিশোধ নয় বরং নারীদের প্রাপ্য সম্মান প্রদান ও গৃহস্থালি কাজে পুরুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা আবশ্যক।
সোমবার (২৮ মার্চ) ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট আয়োজিত ‘ভবিষ্যৎ উন্নয়ন এবং অগ্রযাত্রায় জেন্ডার সমতা নিশ্চিতে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার আঞ্চলিক পরিচালক দেবরা ইফরইমসন, দি পিপলস ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিভাগীয় প্রধান (সমাজকর্ম বিভাগ) হাবিবুর রহমান, ডেভেলপমেন্ট ফর ডিজঅ্যাডভান্টেজ পিপলের (ডিডিপি) নির্বাহী পরিচালক কাজী সোহেল রানা, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের কর্মসূচি প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমান।
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, পারিবারিকভাবে নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। নারীদের নিজেদের মাঝেই পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ ও মূল্যায়নের জায়গাটি প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। গৃহস্থালি কাজের মাধ্যমে নারীরা পারিবারিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা সত্ত্বেও যথাযথ মূল্যায়ন পান না।
কাজী সোহেল রানা বলেন, সরকার নারীদের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নারীর অধিকার এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শহরের নারীদের তুলনায় গ্রামীণ নারীরা কম সুযোগ-সুবিধা পান। শহরের নারীদের পাশাপাশি গ্রামের নারীদের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
হাবিবুর রহমান বলেন, সংসারে একজন নারী যতটা সময় ও কায়িক পরিশ্রম করেন তা যেকোনো চাকরির চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। শুধুমাত্র গৃহে নয়, দেশের অর্থনীতিতে নারীর গৃহস্থালি কাজের মূল্য রয়েছে। নারীরা দিনের অধিকাংশ সময় রান্না, কাপড় ধোয়া, ঘর পরিষ্কার রাখা, সবার সেবা করা ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে আমাদের পরিবার তথা সমাজকে সুন্দরভাবে পরিচালিত করার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করছেন।
দেবরা ইফরইমসন বলেন, উন্নয়নশীল দেশের পাশাপাশি উন্নত দেশেও নারী পুরুষের বৈষম্য এখনও বিদ্যমান। এক্ষেত্রে নারী পুরুষ উভয়ের মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। প্রতিযোগিতা নয়, বরং সহযোগিতার মাধ্যমে নারী-পুরুষ একত্রে কাজ করতে হবে।
গাউস পিয়ারী বলেন, অর্থনীতিতে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের অবদান অপরিসীম। গৃহস্থালি কাজের মাধ্যমে নারীদের ব্যাপক অবদান জাতীয় অর্থনীতিতে এখনও গ্রহণযোগ্য নয়। অর্থনীতিতে নারীর অবদান সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হলে আরও বৃহত্তর পরিসরে গবেষণা প্রয়োজন।